তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি না হওয়ায় ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের কোনো ব্যর্থতা নেই বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
মঙ্গলবার (১৬ মার্চ) দুপুরে সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।
তিস্তা চুক্তি নিয়ে সরকার ধুম্রজালের ভেতরে রেখেছে- বিএনপি নেতাদের এমন বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘তিস্তা চুক্তির ব্যাপারে আমরা তো অনেক দূরে এগিয়েছি। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে এ ব্যাপারে অনেক দূর এগোনো হয়েছে। কিন্তু ভারতের সংবিধান অনুযায়ী এ চুক্তি করতে রাজ্য সরকারের অনুমতি প্রয়োজন। যেহেতু এটি ভারতের একটি রাজ্য এবং বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে, এখানে অবশ্যই রাজ্য সরকারের অনুমোদন লাগে।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এ জন্য এখানে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের কোনো ব্যর্থতা নেই। তাদের যে একাগ্রতা, সেটি আছে। রাজ্য সরকারের অনুমোদন পেলে চুক্তি বাস্তবায়ন হবে। এটি তারাও (বিএনপি) বুঝে। বুঝেও না বুঝার ভান করে। এটি অপ্রাসঙ্গিক হলেও প্রসঙ্গ বানানোর চেষ্টা করছে। আসলে বিএনপি কোনো ইস্যু খুঁজে পাচ্ছে না বলে খড়কুটো ধরে চেষ্টা করছে, এছাড়া অন্য কিছুই নয়।’
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের মেয়াদ বাড়ানো প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপির একটি অভিনন্দন দেয়া প্রয়োজন ছিল সরকারকে, বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রীকে। প্রধানমন্ত্রী মানবিক দিক বিবেচনা করে বেগম খালেদা জিয়াকে তার শাস্তি ছয় মাসের জন্য স্থগিত রেখেছেন। কিন্তু বিএনপি ধন্যবাদ দিতে ব্যর্থ হয়েছে। আসলে বিএনপি ধন্যবাদ দেয়ার সংস্কৃতি লালন করে না। কাউকেই ধন্যবাদ দিতে পারে না।’
ভারতের প্রধানমন্ত্রী সফরে এলে সীমান্ত হত্যা নিয়ে আলোচনা হবে কি-না, জানতে চাইলে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সীমান্ত হত্যা নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে। ইতোমধ্যে সীমান্ত হত্যা অনেক কমেও গেছে। আগে যে সীমান্ত হত্যা হতো, সেটি এখন অনেক কমে গেছে। তবে আমরা চাই সীমান্ত হত্যা শূন্যের কোঠায় আসুক। এটি নিয়ে সবসময় দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে আলোচনা হচ্ছে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পর্যায়েও আলোচনা হচ্ছে।’
ওটিটি প্ল্যাটফর্ম নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, ওটিটি প্লাটফর্ম (ওভার দ্য টপ) ও ইন্টারনেটের মাধ্যমে সম্প্রচার, এটি পৃথিবীর বাস্তবতা। এই বাস্তবতাকে আমাদের মেনে নিতে হবে। কিন্তু এটি এখন যেভাবে কোনো বিধি-নিষেধ ছাড়া পরিচালিত হচ্ছে, সেটি হতে পারে না। সেজন্য আমরা একটি নীতিমালার ভিত্তিতে যাতে এগুলো পরিচালিত হয় এবং একইসঙ্গে তারা যে ব্যবসা করছে, সেখানে সে ব্যবসা করার জন্য ট্যাক্স দিচ্ছে না, সেটি যাতে ট্যাক্সের আওতায় আসে, সেজন্য সরকার কাজ করছে।’
তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে বেশ কয়েক দফা মিটিং হয়েছে। আমরা খুব সহসাই এজন্য একটি নীতিমালা তৈরি করে সেটি স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করে প্রজ্ঞাপন আকারে জারি করতে পারব বলে আশা করছি। যাতে অনলাইন মিডিয়াগুলো পরিচালিত হয়, ওটিটি প্লাটফর্মগুলো পরিচালিত হয়। তারা যাতে ট্যাক্সের আওতায় আসে, সেটিও আমরা করছি।’
হাছান মাহমুদ আরও বলেন, ‘আমরা ইউটিউব এবং ফেসবুককে ক্রমাগতভাবে বলে যাচ্ছি ট্যাক্স দেয়ার জন্য। তারা প্রথমদিকে তো সব কিছুকেই প্রত্যাখ্যান করেছিল। এখন তারা রাজি, তাদের ট্যাক্স দিতে হবে। এই বিষয়গুলো নিয়ে আমাদের কমিটি কাজ করছে। তাদের রিকমেন্ডেশন আসলে তখন আমি বলতে পারব, আমরা কি করতে পারব। তবে এটি সত্য, অন্য দেশ থেকে পরিচালিত হয়ে আমাদের দেশে ব্যবসা করছে এবং অন্যের ব্যবসাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে, যিনি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তাকে কোনো লভ্যাংশের অংশ দিবে না, সেটি হওয়া অনুচিত।’
নদী বন্দর / এমকে