পদ্মা নদীতে পানি কমে গেছে। এতে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় দেশের অন্যতম সেচ প্রকল্প গঙ্গা-কপোতাক্ষের (জিকে) দুটি পাম্প মেশিনই বন্ধ রেখেছে কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার (২৬ মার্চ) রাতে পাম্প দুটির পানি সরবরাহ শূন্যে নিয়ে আসা হয়েছে। এসব তথ্য দিয়েছেন পাম্প হাউসের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান।
মিজানুর রহমান জানান, পদ্মায় পানি সংকটের ফলে অনেক সমস্যা হচ্ছিল। যদি পানি ৪.৫ মিটার আরএলের নিচে নেমে যায় তাহলে পাম্প মেশিনের কয়েল ও বিয়ারিংয়ের তাপমাত্রা বাড়তে থাকে। এতে করে মেশিনে শব্দ ও ঝাঁকুনি হয়। এই সব সমস্যার কারণেই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে তাদের নির্দেশনায় পাম্প দুটি বন্ধ রাখা হয়েছে। পদ্মায় পানির লেভেল গত সপ্তাহে কমে আসায় পাম্প দুটির সরবরাহ শূন্য করতে হয়েছে। ওই সপ্তাহে পানি পাওয়া গেছে ৪.১ থেকে ৪.১৮ মিটার রিডিউসড লেভেল (আরএল) পর্যন্ত।
সেচ প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, সেচ প্রকল্প গঙ্গা-কপোতাক্ষ (জিকে) প্রকল্পের আওতায় বোরো মৌসুমে এবার প্রায় ১৫ হাজার হেক্টর জমিতে সেচ সুবিধা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়। চার জেলায় ১৯৪ কিলোমিটার প্রধান খালের মাধ্যমে তা দেওয়ার কথা ছিল। চার জেলার কৃষির গুণগত মান বৃদ্ধি, স্বল্প ব্যয় এবং উৎপাদন বাড়ানো এই প্রকল্পের লক্ষ্য ছিল। চার জেলার ১৩ উপজেলার ৪ লাখ ৮৮ হাজার একর জমি প্রকল্পের আওতাধীন ছিল। এটি ছিল প্রথম দিকে। পরে পদ্মা নদীতে পানি কমায় পাম্পের প্রধান খালের মুখে পলি ও বালুচর জমে। পানি না থাকায় একে একে ভরাট হতে থাকে জিকে প্রজেক্টের খালগুলো। পরে প্রকল্পের আওতাও কমে আসে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এভাবে চলছে জিকে সেচ প্রকল্প একদিন পানির অভাবে বন্ধ হয়ে যাবে। প্রকল্পটি সচল এবং দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলকে খাদ্যে স্বনির্ভর করতে সময়ের দাবি হয়ে উঠেছে এন্ট্রি ফারাক্কা তথা গঙ্গা ব্যারেজ নির্মাণ।
মিজানুর রহমান বলেন, আগামী ৩১ মার্চ বাংলাদেশের প্রাপ্যতা শুরু হবে। সে সময় পানি সরবরাহ বাড়লে পাম্প দুটির পানি সরবরাহ আবার সচল হবে। ফারাক্কা চুক্তির কারণে এ মৌসুমে গঙ্গার পানির প্রাপ্যতা অনুযায়ী ১০ দিন বাংলাদেশ এবং ১০ দিন ভারতের পাওয়ার কথা।
নদী বন্দর / এমকে