আমদানিকারকরা দীর্ঘদিনেও খালাস না করায় ২৯৮ কনটেইনার পণ্য মাটিতে গর্ত করে পুঁতে ফেলা হচ্ছে। চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আমদানি করা এসব পণ্যের তালিকায় রয়েছে ফলমূল, মাছ, ফিশ ফিড, মিট অ্যান্ড বোন মিলসহ বিভিন্ন ধরনের ছয় হাজার টন সামগ্রী।
চট্টগ্রাম বন্দর ও ডিপোতে নতুন আসা পণ্যের জন্য জায়গা তৈরি করতে সোমবার সকালে এ কাজ শুরু করে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস কর্তৃপক্ষ। শেষ করতে অন্তত ১০ দিন লাগবে বলে জানা গেছে।
কাস্টম কর্তৃপক্ষ বলছে, নিকট অতীতে একসঙ্গে এত বিপুল পরিমাণ পণ্য ধ্বংস করা হয়নি। ফলে বন্দরের ইয়ার্ডে কনটেইনারের চাপ কিছুটা হলেও কমে আসবে। সময় মতো পণ্য ডেলিভারি না নেয়ায় গত মাস থেকে বন্দরে জটের আশঙ্কা দেখা দেয়। বন্দর কর্তৃপক্ষ আমদানি পণ্যবোঝাই কনটেইনার দ্রুত সরিয়ে নিতে ব্যবসায়ীদের অনুরোধ জানান। কিন্তু স্টোর রেন্ট দ্বিগুণ করার পরও কনটেইনার ডেলিভারিতে গতি না আসায় কর্তৃপক্ষ এ সিদ্ধান্ত নেয়।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের নিলাম শাখার ডেপুটি কমিশনার ফয়সাল বিন রহমান বলেন, ২৯৮ কনটেইনারে ধ্বংসযোগ্য পণ্য রয়েছে ছয় হাজার টন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আছে ফিশ ফিড। এছাড়া আপেল, কমলাসহ বিভিন্ন ধরনের ফলমূল ও ফিশ অ্যান্ড মিট বোন মিলসহ কয়েক ধরনের পণ্য রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এগুলো ২০১০ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে আমদানি করা হয়েছিল। সোমবার ২৭ কনটেইনার পণ্য ধ্বংস করা হয়েছে। নগরের উত্তর হালিশহরের বেড়িবাঁধ সংলগ্ন পাঁচ একর জায়গায় এসব পণ্য মাটি চাপা দেয়া হচ্ছে। এই কাজ শেষ হতে অন্তত ১০ দিন সময়ের প্রয়োজন হবে।
বন্দর সূত্রে জানা গেছে, বাজারে দাম কমলে লোকসানের আশঙ্কায় অনেক সময় পণ্য খালাস করেন না আমদানিকারকরা। আবার যখন দাম বাড়ে, ততদিনে কনটেইনারে থাকা ফলমূলসহ নানা রকম ভোগ্যপণ্য নষ্ট হয়ে যায়। আরও বড় লোকসানের আশঙ্কায় পচা পণ্য তারা না নিয়ে বন্দরেই ফেলে রাখেন। এসব পণ্য শেষ পর্যন্ত নিলামে বিক্রি করা হয়।
বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরে শুধু নিলামযোগ্য কনটেইনারই রয়েছে প্রায় সাত হাজার টিইইউএস। প্রতি বছর এর পরিমাণ বাড়ছে। সময় মতো কনটেইনারের নিলাম না হওয়ায় একদিকে চট্টগ্রাম বন্দরের মূল্যবান জায়গা দখল হয়ে আছে, পাশাপাশি বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।
নদী বন্দর / এমকে