পদ্মা নদীতে পানি কমে যাওয়ায় কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প গঙ্গা-কপোতাক্ষ (জিকে) সেচ প্রকল্পের দুটি পাম্প মেশিনই বন্ধ রেখেছে কর্তৃপক্ষ।
এর আগে শুক্রবার (২৬ মার্চ) সন্ধ্যার পর থেকে পাম্প দুটির পানি সরবরাহ শূন্যে নিয়ে আসা হয় বলে জানিয়েছেন পাম্প হাউসের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান।
তিনি জানান, গত সপ্তাহে পদ্মায় পানির লেভেল কমে আসায় শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার পর পাম্প দুটির সরবরাহ শূন্য করতে হয়েছে। ওই সপ্তাহে পানি পাওয়া গেছে ৪.১ থেকে ৪.১৮ মিটার রিডিউসড লেভেল (আরএল) পর্যন্ত।
প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, ‘৪.৫ মিটার আরএলের নিচে নামলেই পাম্প মেশিনের কয়েল ও বিয়ারিংয়ের তাপমাত্রা বাড়ছে। শব্দ ও ঝাঁকুনি হচ্ছে। এ কারণেই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে পাম্প দুটি বন্ধ রাখতে বাধ্য হই।’
এ বছরের ১৫ ও ১৭ জানুয়ারি কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, মাগুরা এবং ঝিনাইদহের কৃষকদের সেচ সুবিধা দিতে গঙ্গা-কপোতাক্ষ (জিকে) সেচ প্রকল্পের দুটি পাম্প চালু করা হয়। এগুলো একযোগে সেকেন্ডে ১ হাজার ২০০ কিউসেক পানি সরবরাহে সক্ষম। চালুর পর থেকে পাম্প দুটি ১০ মাস নিরবচ্ছিন্নভাবে চালানোর কথা ছিল।
মিজানুর রহমান বলেন, ‘ফারাক্কা চুক্তির কারণে এ মৌসুমে গঙ্গার পানির প্রাপ্যতা অনুযায়ী ১০ দিন বাংলাদেশ এবং ১০ দিন ভারতের পাবার কথা। আগামী ৩১ মার্চ বাংলাদেশের প্রাপ্যতা শুরু হবে। সে সময় পানি সরবরাহ বাড়লে পাম্প দুটির পানি সরবরাহ আবার সচল হবে।’
জিকে প্রকল্পের আওতায় বোরো মৌসুমে এবার চার জেলায় ১৯৪ কিলোমিটার প্রধান খালের মাধ্যমে প্রায় ১৫ হাজার হেক্টর জমিতে সেচসুবিধা দেয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়।
১৯৫৪ সালে পদ্মা নদীর তীরে দেশের বৃহত্তম এই সেচ প্রকল্পটি হাতে নেয়া হয়। নদী থেকে একটি খালে পানি এনে পাম্পে করে তুলে সেচ প্রকল্পের ক্যানেলে সরবরাহ করা হয়।
প্রকল্পের লক্ষ্য ছিল চার জেলার কৃষির গুণগত মান বৃদ্ধি, স্বল্প ব্যয় এবং উৎপাদন বাড়ানো। শুরুর দিকে চার জেলার ১৩ উপজেলার ৪ লাখ ৮৮ হাজার একর জমি প্রকল্পের আওতাধীন ছিল। পরে পদ্মা নদীতে পানি কমায় পাম্পের প্রধান খালের মুখে পলি ও বালুচর জমে ওঠে। পানি না থাকায় একে একে ভরাট হতে থাকে জি কে প্রজেক্টের খালগুলো। পরে প্রকল্পের আওতাও কমে আসে।
নদী বন্দর / এমকে