1. badsha.dru@gmail.com : admi2017 :
  2. nadibandar2020@gmail.com : Nadi Bandar : Nadi Bandar
ফলন ভালো হলেও বিপাকে আলুচাষিরা - Nadibandar.com
বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ০৭:৪৬ পূর্বাহ্ন
নদী বন্দর প্রতিনিধি:
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ৭ এপ্রিল, ২০২১
  • ১৫১ বার পঠিত

দিনাজপুরে এবার চাহিদার চেয়ে ৫ লাখ মেট্রিক টন আলু বেশি উৎপাদিত হয়েছে। এবার জেলায় মোট আলু উৎপাদিত হয়েছে ১০ লাখ মেট্রিক টন। কিন্তু দিনাজপুরে হিমাগার রয়েছে মাত্র ১৩টি। যেখানে মাত্র ১ লাখ ২৪ হাজার ৯৬০ মেট্রিক টন আলু সংরক্ষণ করা যায়। বাকি ৮ হাজার ৭৬ মেট্রিক টন আলু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন আলুচাষিরা।

দিনাজপুরের ৩৪ লাখ ৮৮ হাজার ৭৯৩ জন মানুষের জন্য আলুর চাহিদা প্রায় ৫ লাখ মেট্রিক টন। অতিরিক্ত উৎপাদিত ৫ লাখ মেট্রিক টন আলু জেলার বাইরে দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হয়।

বাজারে দাম নেই, হিমাগারে জায়গা নেই। তাই বিপুল পরিমাণ এই আলু রাখার জায়গা না থাকায় বাধ্য হয়েই লোকসানে আলু বিক্রি করে দিচ্ছেন চাষিরা। কেউ কেউ দামের আশায় ক্ষেতের মধ্যেই আলু স্তূপ করে রেখে দিয়েছেন।

এদিকে কৃষি বিভাগ বলছে, দিনাজপুরে যে জাতের আলু উৎপাদিত হয় তা বিদেশে রফতানিযোগ্য নয়। রফতানিযোগ্য আলু চাষ শুরু হলে এই সঙ্কট আর থাকবে না বলে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়।

দিনাজপুরের বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, উচ্চ ফলনশীল হিরা, আইলসা, পেট্রোনিস, মুল্টা, ডায়ামন্ট, কার্ডিনাল, মন্ডিয়াল, কুফরী সিন্দুরী, চমক, ধীরা, গ্রানোলা, ক্লিওপেট্রা, বারি টিপিক্রস-১ এবং বারি টিপিক্রস-২, বারি আলু-১ (হীরা), বারি আলু-৪ (আইলসা), বারি আলু-৭ (ডায়ামন্ট), বারি আলু-৮ (কার্ডিনাল), বারি আলু-১১ (চমক), বারি আলু-১২ (ধীরা), বারি আলু-১৩ (গ্রানোলা), বারি আলু-১৫ (বিনেলা), বারি আলু-১৬ (আরিন্দা), বারি আলু-১৭ (রাজা), বারি আলু-১৮ (বারাকা), বারি আলু-১৯ (বিন্টজে) এবং বারি আলু-২০ (জারলা) জাত গত কয়েকদিন আগে পাইকারি বাজারে ১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও এখন তা নেমে এসেছে ৯ টাকায়।

অপরদিকে দেশি জাতের আলু আউশা, চল্লিশা, দোহাজারী লাল, ফেইন্তাশীল, হাসরাই, লাল পাকরী, লালশীল, পাটনাই, সাদা গুটি শীল বিলাতী ও সূর্যমুখী আলু পাইকারি বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১৩ টাকা দরে। এতে উৎপাদন খরচও উঠছে না চাষিদের।

দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার চাকাই গ্রামের আলু চাষি আনসারুল ইসলাম জানান, ১৫ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছেন তিনি। প্রতি বিঘায় তার খরচ হয়েছে প্রায় ৫০ হাজার টাকা। আর প্রতি বিঘায় আলুর ফলন হয়েছে ১০০ থেকে ১১০ মন। কয়েক দিন আগে তিনি উচ্চ ফলনশীল জাতের আলু প্রতি কেজি বিক্রি করেছেন সাড়ে ৯ টাকা দরে। এতে প্রতি বিঘায় তার লোকসান হয়েছে প্রায় ১০ হাজার টাকা।

হিমাগারে জায়গা না পেয়ে কেউ আলু স্তূপ করে রেখে দিয়েছেন দামের আশায়। জায়গা ও দাম না থাকায় অনেকেই মাঠে স্তূপকৃত আলু রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন।

jagonews24

দিনাজপুরের বিভিন্ন হিমাগারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ধারণক্ষমতা শেষ হয়ে যাওয়ায় ইতোমধ্যেই বুকিং নেয়া বন্ধ করে দিয়েছেন হিমাগার মালিকরা।

বীরগঞ্জ উপজেলার মেসার্স হিমাদ্রী হিমাগারের ম্যানেজার সাদেক আলী জানান, তাদের হিমাগারের ধারণক্ষমতা ৮ হাজার ৮০০ মেট্রিক টন। ইতোমধ্যে আলু বুকিং হয়ে যাওয়ায় তাদের হিমাগারে আর জায়গা নেই। এজন্য বুকিং বন্ধ করে দিয়েছেন তিনি।

বোচাগঞ্জ উপজেলার রাহবার হিমাগার প্রাইভেট লিমিটেডের ম্যানেজার শাহজাহান আলী বলেন, তাদের হিমাগারের ধারণক্ষমতা ১০ হাজার ৮০ মেট্রিক টন। ইতোমধ্যেই তা পূরণ হয়ে গেছে। এই অবস্থায় প্রতিদিন চাষিরা আলু রাখার জন্য আসলেও আর নেয়া সম্ভব হচ্ছে না। এতে বাধ্য হয়েই চাষিরা হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন। কিন্তু করার কিছু নেই।

দিনাজপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক তৌহিদুল ইকবাল বলেন, দিনাজপুর জেলায় চলতি মৌসুমে ৪৮ হাজার ৫৭৮ হেক্টর জমিতে প্রায় ১০ লাখ মেট্রিক টন আলু উৎপাদিত হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, দিনাজপুরে যেসব জাতের আলু উৎপাদন হয় তা বিদেশে রফতানি করা যায় না। যেসব দেশে আলু রফতানি করা যেতে পারে তারা এই জাতের আলু পছন্দ করে না। তাদের পছন্দের আলুর বীজ ওই সব দেশ থেকে আমদানি করা হচ্ছে। আগে অনুমোদন লাগলেও সরকার এখন তা উন্মুক্ত করে দিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বেসরকারিভাবে অনেকে উদ্যোগ নিয়ে বিদেশ থেকে বীজ আমদানি করছেন। আগামী ১/২ বছরের মধ্যে দিনাজপুরে বিদেশে রফতানিযোগ্য আলু চাষ শুরু হবে বলে তিনি আশাবাদী। তখন আর আলু নিয়ে কৃষকদের বিপাকে পড়তে হবে না। কৃষক ভালো দামও পাবেন। তাছাড়া দিনাজপুরে সরকারি-বেসরকারিভাবে আরও হিমাগার নির্মাণ করা জরুরি বলে তিনি মনে করেন।

নদী বন্দর / এমকে

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2020 Nadibandar.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com