জানা গেছে, এপ্রিলের দ্বিতীয় সপ্তাহে মঙ্গল গ্রহের আকাশে দেখা যাবে ইনজেনুইটি হেলিকপ্টার। সম্প্রতি এক বিবৃতিতে হেলিকপ্টারের উড়ানের এই বিলম্বের কথা জানিয়েছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান নাসা-এর জেট প্রোপালসন ল্যাবরেটরি।
নাসা সূত্রে জানা গেছে, আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই মঙ্গলের আকাশ একের পর এক ড্রোনের দেখা মিলবে। যার সাহায্যে এই গ্রহের খুঁটিনাটি তথ্য জানা যাবে। মঙ্গল গ্রহের বিশাল এলাকাজুড়ে নজরদারি চালানো যাবে। আর এর নেপথ্যে রয়েছে নাসার পাঠানো সর্বাধুনিক রোভার ‘পারসিভের্যান্স’-এর সঙ্গে যুক্ত ‘ইনজেনুইটি’ নামে একটি হেলিকপ্টার। এর আগে ১৯৯৭ সালে মঙ্গলের মাটিতে অবতরণ করেছিল নাসার সজরনার রোভার। কিন্তু এবার অন্যমাত্রা পেতে চলেছে মঙ্গল অভিযান।
এক্ষেত্রে মহাকাশে এক নতুন স্বপ্নের বাস্তবায়নে ব্যস্ত নাসা। সেই লক্ষ্যে এবার প্রথম কোনো হেলিকপ্টার পাঠানো হয়েছে। যা উড়ে বেড়াবে মঙ্গল গ্রহের আকাশে। রোভার ল্যান্ডিংয়ের পর রোভারের পেট চিরে বেরিয়ে পড়বে হেলিকপ্টার। আর এই কাজ সম্পূর্ণ হতে লাগবে মাত্র কয়েক সেকেন্ড। ইনজেনুইটি হেলিকপ্টারের ওজন প্রায় ৪ পাউন্ডের কাছাকাছি। যার মাথার উপরে রয়েছে দু’টি ব্লেড বা রোটর। প্রত্যেকটির ব্যাস ৪ ফুট বা ১.২ মিটার।
তবে এ নিয়ে নানা দুশ্চিন্তাও রয়েছে। মহাকাশ বিজ্ঞানীদের কথায়, পৃথিবীর মতো মঙ্গলের উড়ান কিন্তু এতটা সোজা নয়। এক্ষেত্রে মাধ্যাকর্ষণ শক্তি, বায়ুমণ্ডলের ঘনত্বসহ একাধিক বিষয় মাথায় রেখে অত্যন্ত নিয়ন্ত্রিতভাবে হেলিকপ্টারকে ওড়াতে হবে।
এক্ষেত্রে দিনের বেলায় মঙ্গল গ্রহের পৃষ্ঠতলে প্রায় অর্ধেক সৌরশক্তি এসে পৌঁছায়। রাতের তাপমাত্রাও অত্যন্ত কম হয়। প্রায় ৯০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি নেমে যায় তাপমাত্রা। আর এই দুর্গম ও প্রতিকূল আবহওয়ায় হেলিকপ্টারের উড়ান কষ্টসাধ্য। একাধিক যন্ত্রাংশ বিকল হওয়ার সম্ভাবনাও প্রবল।
ইনজেনুইটি হেলিকপ্টারের আকার ও এর ওজনও একটি উল্লেখযোগ্য বিষয়। মঙ্গলের মাটিতে ওড়ার জন্য হালকা হতে হবে হেলিকপ্টারটিকে। এক্ষেত্রে সমস্ত বিষয় মাথায় রেখেই রোটর, সোলার প্যানেল, ইলেকট্রিক হিটারসহ অন্যান্য যন্ত্রাংশের ডিজাইন করা হয়েছে। রয়েছে ভ্যাকিউম চেম্বারসহ নানা সিস্টেম। যা একাধিকবার টেস্ট করা হয়েছে।
এই বিষয়ে জেপিএল-এর হেলিকপ্টার চিফ ইঞ্জিনিয়ার বব বলরাম জানিয়েছেন, ছয় বছর আগে এই স্বপ্নের উড়ান শুরু। তখন থেকেই নানা প্রতিবন্ধকতা ও প্রতিকূলতার কথা মাথায় রেখে এই রোভার ও হেলিকপ্টার তৈরি করা হয়েছে। আপাতত ১১ এপ্রিলের অপেক্ষা করছি।
নদী বন্দর / এমকে