বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসকে বিকৃতি করে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের আত্মদানকে অমর্যাদা করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া।
তিনি বলেন, যতদিন স্বাধীনতার সকল ঘটনাকে সঠিকভাবে উপস্থাপন না করা হবে ততদিন জাতি হিসেবে আমরা মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবো না। একদিনে বা একটি ঘোষণার মধ্য দিয়েই বাংলাদেশ স্বাধীন হয়নি। স্বাধিকার থেকে স্বাধীনতা আন্দোলন-মুজিবনগর সরকার গঠন-মুক্তিযুদ্ধ সকল ঘটনার বাঁকে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোকেও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেয়া উচিত। ইতিহাসকে আপন গতিতে চলতে দেয়া উচিত। ইতিহাসের গতিরোধ করার ফলাফল কখনো শুভ নয়।
শনিবার (১৭ এপ্রিল) ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ আয়োজিত এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ একদিনে শুরু হয়নি। বাংলার জনগণকে মুক্তির স্বপ্ন দেখিয়ে মুক্তিযুদ্ধের দিকে ধাবিত করতে ইতিহাসের বাঁকে অনেকেরই অবদান রয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ ছিল একটি দীর্ঘ অথচ ধারাবাহিক আন্দোলন-সংগ্রামের ফসল। স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদান যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনই মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানী, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমেদ, জেনারেল ওসমানী, আ স ম রব, শাহজাহান সিরাজদের অবদানকেও খাটো করে দেখার সুযোগ নাই। তাদের সবার অবদানকে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেয়া প্রয়োজন। ইতিহাস থেকে কাউকে বাদ দেয়া বা ইতিহাসে তাদের যথাযথ সম্মান প্রদর্শন না করা ইতিহাসের প্রতিই অবিচার।
ন্যাপ মহাসচিব বলেন, মুক্তিসংগ্রামের ইতিহাসকে বিশেষ ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা দলের একক অবদান দাবি করে প্রকারান্তরে ইতিহাসকে বিকৃতি করা হচ্ছে। এভাবে শাসকগোষ্ঠী ৫০ বছরই ইতিহাসের স্বাভাবিক গতিপথকে বাধাগ্রস্ত করেছে। ফলে আজ মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে বিভ্রান্তি চলছে। যে যার অবস্থান থেকে ইতিহাস নির্মাণের চেষ্টা করছে, যা জাতি হিসেবে আমাদেরকে লজ্জিত করছে। স্বাধীনতা সুবর্ণজয়ন্তীতেও আমরা মুজিবনগর সরকারের উপদেষ্টা, ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীকে রাষ্ট্রীয়ভাবে উপস্থাপন করতে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছি, যা লজ্জাজনক।
বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান স্বপন কুমার সাহা, যুগ্ম মহাসচিব মো. নুরুল আমান চৌধুরী, আতিকুর রহমান, এহসানুল হক জসীম, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. কামাল ভূঁইয়া, মো. রেজাউল করিম রীবন, কুমিল্লা বিভাগীয় সমন্বয়কারী মো. মহসিন ভুইয়া, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সমন্বয়কারী ডা. জসিম তালুকদার, আইন-বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সাত্তার, ঢাকা মহানগর সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মো. নজরুল ইসলাম, যুগ্ম সম্পাদক মো. শামিম ভুইয়া প্রমুখ।