পৌষের শুরুতেই তীব্র শীতে কাপছে দেশের অধিকাংশ এলাকার প্রাণীকূল। শনিবার (১৯ ডিসেম্বর) চুয়াডাঙ্গায় তাপমাপার যন্ত্রের পারদ নেমে আসে ৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। ফলে গতরাতে শীতের তীব্রতা আরও বেড়েছে।
শনিবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে কুড়িগ্রামে রাজারহাটে ৬ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল টেকনাফে ২৮ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চলতি সপ্তাহ জুড়েই তীব্র শীতের প্রকোপ থাকবে।
আবহাওয়া বিশেষজ্ঞদের ভাষ্য, এতদিন মেঘ আর কুয়াশার সঙ্গে শীতের অনেকটা লুকোচুরি চলছিল। দক্ষিণের ভারী বাতাসকে হটিয়ে শেষ পর্যন্ত উত্তরের শীতল বাতাস অধিপত্য বিস্তার করছে। ফলে শীত জেঁকে বসছে। শুক্রবার থেকে তাপমাত্রা দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে। শনিবার থেকে দেশের অধিকাংশ এলাকায় মৌসুমের প্রথম শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়েছে। আগামী ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত এর প্রভাব থাকবে।
পুরো মৌসুমে তিনটি শৈত্যপ্রবাহের পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর। উত্তরাঞ্চল ছাড়িয়ে পশ্চিমাঞ্চল তথা চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, যশোরেও শৈত্যপ্রবাহের বিস্তার ঘটছে। চুয়াডাঙ্গায় শনিবার তাপমাত্রা এক লাফে ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমে ৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ঠেকেছে। চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তামপাত্রাও হ্রাস পেয়ে ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। শৈত্যপ্রবাহে দুর্ভোগ বেড়েছে ছিন্নমূল ও নিম্ন আয়ের মানুষের। রোগ-বালাইও বাড়ছে।
এদিকে, শীতার্ত মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ শুরু করেছে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসন। শনিবার রাতে চুয়াডাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশন ও সদর উপজেলার হাতিকাটা আবাসনে ২’শ জন অসহায় দুস্থদের মাঝে কম্বল বিতরণ করেছেন জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার। কম্বল বিতরণের পাশাপাশি তীব্র শীতের মধ্যেও অসহায় ও দুস্থ মানুষের সার্বিক খোঁজ-খবর নেন তিনি।
এ সময় জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে শীতার্ত মানুষের জন্য এ পর্যন্ত ২০ হাজার ৭০০ কম্বল ও নগদ ২৪ লাখ টাকা আর্থিক সহযোগিতা পাওয়া গেছে। এগুলো জেলার চার উপজেলায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের অনুকূলে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে যা বিতরণ করা হচ্ছে। প্রয়োজনে আরও চাহিদা পাঠানো হবে।
তিনি আরও বলেন, ভৌগলিক কারণে চুয়াডাঙ্গায় শীতের সময় বেশি শীত ও গরমের সময় বেশি গরম অনুভূত হয়। এখন শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়েছে। তাপমাত্রা আরও কমে গেলে খুব কষ্টে থাকবে অসহায় মানুষগুলো। তাই এই কঠিন সময়ে প্রশাসনের পাশাপাশি সমাজের বিত্তবানসহ স্বচ্ছল ব্যক্তিদের অসহায় ও দুস্থ মানুষের সহযোগিতায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
কম্বল বিতরণকালে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ সাদিকুর রহমান, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইসরাত জাহান, জেলা প্রশাসনের নেজারত ডেপুটি কালেক্টর আমজাদ হোসেনসহ অন্যরা।
নদী বন্দর / পিকে