ধর্মীয় ও রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি, জঙ্গিবাদী ও রাষ্ট্রবিরােধী কর্মকাণ্ড পরিচালনার দায়ে হেফাজতে ইসলামকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা’আত বাংলাদেশ।
এছাড়া কওমী মাদরাসাগুলাে সরকারি নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি মানসম্মত কারিকুলাম প্রণয়ন এবং ধর্মীয় স্থাপনা জঙ্গিবাদ মুক্তকরণের দাবিও জানায় সংগঠনটি।
সোমবার (২৬ এপ্রিল) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
এর আগে গত শনিবারও হেফাজতে ইসলামকে উগ্রবাদী সংগঠন ঘোষণা করে তাদের নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছে আহলে সুন্নাত। ওইদিন সংগঠনটির ৫৫১ আলেম এক যৌথ বিবৃতিতে এই দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনটির নির্বাহী মহাসচিব মাওলানা আ.ন.ম. মাসউদ হােসাইন আল কাদেরী। সভাপতিত্ব করেন প্রেসিডিয়াম সদস্য আল্লামা আবদুর রহমান আল কাদেরী। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রেসিডিয়াম সদস্য আল্লামা সৈয়দ ফকির মুসলিম উদ্দিন আহমদ নূরী আল কাদেরী, আল্লামা মােতাসিম বিল্লাহ রাব্বানী, আল্লামা তাজুল ইসলাম চাঁদপুরী, আল্লামা আলমগির হােসেন যুক্তিবাদীসহ বেশ কয়েকজন।
এ সময় তারা বলেন, হেফাজতে ইসলাম কর্তৃক শাপলা চত্বরের তাণ্ডব জাতি প্রত্যক্ষ করেছিল। ওই সময় সংগঠনটি বায়তুল মােকাররমে কোরআন শরীফে অগ্নিসংযােগ, বাসে অগ্নিসংযােগসহ আশপাশে কয়েককিলােমিটার এলাকার গাছপালা নিধন , দোকানপাট ও প্রতিষ্ঠানে এক নারকীয় পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। যার সাথে ইসলামের দূরতমও কোনো সম্পর্ক নেই। তখন থেকেই আহলে সুন্নাত হেফাজতে ইসলামের বিরোধিতা করে আসছে।
এরপর গত ২৬ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদির আগমন ও তার পরবর্তীতে তারা ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও চট্টগ্রামে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। রাষ্ট্রীয় কোটি কোটি টাকার সম্পদ বিনষ্ট করেছে, এটিও ইসলাম সম্মত নয়। তারা ইসলামের হেফাজত নয় বরং ইসলামের নামে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিই তাদের লক্ষ্য।
আজ এ দেশে তারা তাদের কর্মকাণ্ডে তাদের ধর্মীয় ভ্রান্তনীতি ও জঙ্গীবাদ জনগণের নিকট প্রমাণ করে দিয়েছে। তাই জঙ্গিবাদী ও ধর্মবিরােধী কর্মকাণ্ডের কারণে তাদের জঙ্গি সংগঠন হিসেবে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ করার জন্য সরকারের নিকট জোর দাবি জানাচ্ছি।
এ সময় তারা মামুনুল হকের রিসোর্টকাণ্ডের উল্লেখ করে বলেন, মানবিক বিয়ে বলতে ইসলামে কোনো কিছুর অস্তিত্ব নেই। বরং শরিয়তসম্মত ইসলামী বিয়েই একমাত্র বিয়ে। এর বাইরে চুক্তিভিত্তিক বিয়ে মানেই হলাে জেনা ব্যভিচার, হারাম। ইসলামী নেতা হয়ে এমন অনৈসলামিক কর্মকাণ্ডের তীব্রনিন্দা ও উপযুক্ত শাস্তি দাবি করছি।
এ সময় বক্তারা বলেন, ‘দেশের কওমী মাদরাসাগুলাে সরকারি কোনো বিধান মানে না। তাদের মাদরাসায় জাতীয় সঙ্গীত হয় না, জাতীয় দিবসে পতাকা উত্তোলন করে না। বরং এই দিবস পালনের বিষয়ে আপত্তি করে জাতিকে বিভ্রান্ত করার অপপ্রয়াস চালায়। এখন সময় এসেছে কওমী মাদরাসাগুলোকে পূর্ণ সরকারি নিয়ন্ত্রণে এনে তাদের মানসম্মত কারিকুলামে রূপান্তরের।
তারা আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত মােতাবেক পাঁচশতাধিক মডেল মসজিদ নির্মাণ হচ্ছে, সেসব মসজিদেও যাতে এসব জঙ্গিবাদী গােষ্ঠী ইমাম বা খতীব পদে নিয়ােগ না পায়, সে ব্যাপারে সরকারের সিদ্ধান্ত কামনা করছি।
নদী বন্দর / এমকে