পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত নিম্নচাপটি পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে গভীর নিম্নচাপ আকারে একই এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আরও ঘনীভূত হয়ে ঝূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়ে উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে।
গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৮ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের নিকটে সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে।
চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা বন্দরগুলোকে ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরা নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে তাদের গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলা হয়েছে।
সর্বশেষ বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।
তাতে আরও বলা হয়েছে, এটি গত মধ্যরাতে (২৩ মে) চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৭০০ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৬২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে, মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৪৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিলে এর নাম হবে ইয়াস। এই নামটি রেখেছে ওমান।
রোববার রাতে আবহাওয়াবিদ আবদুর রহমান বলেছেন, ‘এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে যে পূর্বাভাস আছে, তাতে নিম্নচাপটি যদি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেয়, তাহলে সেটা বুধবার (২৬ মে) দুপুরের পর থেকে সন্ধ্যার মধ্যে আঘাত হানা শুরু করতে পারে। এখন পর্যন্ত বেশিরভাগ সম্ভাবনা হলো ভারতের ওড়িষা, পশ্চিমবঙ্গ, বাংলাদেশের পশ্চিমাঞ্চলে ঘূর্ণিঝড়টি আঘাত করতে পারে। বাংলাদেশের সুন্দরবনেও এর প্রভাব পড়তে পারে।’
একই দিন আবহাওয়াবিদ রুহুল কুদ্দুস বলেছেন, ‘ঘূর্ণিঝড় যে তৈরি হতে যাচ্ছে, এর প্রতিক্রিয়া সোমবার ভোর থেকে চট্টগ্রাম, বরিশাল এসব এলাকায় প্রভাব পড়া শুরু করতে পারে। বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা আছে।’
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান জানিয়েছেন, উত্তর আন্দামান সাগর ও তৎসংলগ্ন পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে যে লঘুচাপ সৃষ্টির আভাস দেয়া হচ্ছে, সেটি যদি ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’-এ রূপান্তর হয়, তবে তা এক পর্যায়ে শক্তিশালী ‘সুপার সাইক্লোনে’ পরিণত হতে পারে। এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের পুরো উপকূলকে সতর্ক থাকতে হবে।
নদী বন্দর / জিকে