নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে ছেলে নাজমুছ সাকিব নাবিল হত্যাকাণ্ডের পর ‘পলাতক’ নাসরিন আক্তারের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (১ জুন) দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘সোমবার (৩১ মে) বিকেলে নরসিংদী শহরের বাজিড়মোড়ের নিরালা নামক আবাসিক হোটেল থেকে এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ওই নারীর বাবার নাম ও চেহারায় নাসরিন আক্তারের সঙ্গে মিল পেয়েছি আমরা।’
এদিকে ছেলে হত্যার অভিযোগে মা নাসরিন আক্তার ও অজ্ঞাত আরও কয়েকজনকে আসামি করে মঙ্গলবার দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি মামলা করেন নিহতের বাবা ছগির আহমেদ।
মামলার এজাহারে তিনি উল্লেখ করেন, রোববার রাত ৮টায় বাসায় ফিরে ঘর তালাবদ্ধ দেখতে পান ছগির। তার কাছে থাকা চাবি দিয়ে তালা খুলে রুমে প্রবেশ করে সন্তানকে জখমপ্রাপ্ত অবস্থায় ফ্লোরে পড়ে থাকতে দেখেন। তার শরীরে ধারালো অস্ত্রের ২০-২৫টি দাগ রয়েছে।
সাকিবকে সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ডের প্রো-অ্যাকটিভ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানকার চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী ধানমন্ডি হেলথ কেয়ার হাসপাতালের আইসিইউতে নেয়ার সময় সাকিব মারা যান। ঘটনার পর থেকে তার স্ত্রী পলাতক ছিলেন।
এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, তার স্ত্রীর দীর্ঘদিন যাবত মানসিক সমস্যা ছিল। তার সন্দেহ স্ত্রী নাসরীন ও অজ্ঞাতনামা আসামির সহায়তায় সন্তান সাকিবকে হত্যা করা হয়েছে।
এ বিষয়ে মামলার বাদী ছগির আহমদ বলেন, ‘মামলার বিষয়টি গতকাল থেকে প্রক্রিয়াধীন ছিল। আজ দুপুরে আমাকে হোটেলে পাওয়া এক নারীর মরদেহের ছবি দেখানো হয়। ছবিটি আমার স্ত্রীর।’
এদিকে মরদেহ উদ্ধার হওয়া ওই হোটেল কর্তৃপক্ষ জানায়, রোববার (৩০ মে) সন্ধ্যা ৭টার দিকে ওই নারী একাই হোটেলে রাত্রিযাপন করতে আসেন। ওই সময় তিনি জানিয়েছিলেন, গাজীপুর থেকে তিনি এসেছেন। রাত হয়ে যাওয়ায় হোটেলে থাকতে চান। রেজিস্ট্রারে নাম-ঠিকানা লেখার পর ওই নারীকে হোটেলটির নিচতলার ৬ নম্বর কক্ষ দেয়া হয়।
একটি পলিথিনের ব্যাগে করে রাতে খাওয়ার জন্য নাস্তা সঙ্গে এনেছিলেন। এরপর তিনি আর ওই কক্ষ থেকে বের হননি। সোমবার সকালে তার কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে অনেকক্ষণ ডাকাডাকি করেন হোটেলটির কর্মচারীরা। পরে নরসিংদী সদর থানায় ঘটনা জানানো হয়। দুপুরের দিকে পুলিশ এসে ওই কক্ষের দরজা ভেঙে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে।
পুলিশ জানায়, খবর পেয়ে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে দরজা ভেঙে ওই কক্ষে প্রবেশ করে পুলিশ। এ সময় গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় তার ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পায় তারা। প্রাথমিকভাবে পুলিশের ধারণা, ওই নারী আত্মহত্যা করার জন্যই গতকাল সন্ধ্যায় হোটেলটিতে উঠেছিলেন।’
নদী বন্দর / এমকে