ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে জোয়ারের পানিতে সাতক্ষীরা উপকূলের চারটি উপজেলার ৭ হাজার ৫৬০টি মাছের ঘের পানিতে ভেসে গেছে। এতে মৎস্য খাতে অন্তত ৫৫ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ভরা মৌসুমে মাছের ঘের ভেসে যাওয়ায় আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন চাষিরা।
জেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলার শ্যামনগর, আশাশুনি, কালিগঞ্জ ও দেবহাটা উপজেলার ২৭টি ইউনিয়নে মোট ৭ হাজার ৫৬০টি মাছের ঘের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর আয়তন ৬ হাজার ৭৩৮ হেক্টর। এই খাতে মাছ এবং অবকাঠামোগত সব হিসাব মিলিয়ে অন্তত ৫৫ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
আশাশুনি উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজমুল হোসেন খান বলেন, ‘ঐ এলাকায় ১ হাজার ৪০০ হেক্টর জমির মাছের ঘের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দেবহাটা উপজেলায় ২০০ ঘের পানিতে তলিয়ে আছে।’ অপরদিকে, শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু জার গিফারী বলেন, ‘১ হাজার ৬০০ হেক্টর আয়তনের প্রায় ২ হাজার ৫০০ ঘেরের মাছ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’
কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খন্দকার রবিউল ইসলাম বলেন, ‘তার এলাকায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণের কাজ চলছে। তবে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার ঘেরের মাছ পানিতে ভেসে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।’
সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার আনুলিয়া ইউনিয়নের বিছট গ্রামের চিংড়িচাষি নুরুল আলম জানান, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে প্রতাপনগরের কুড়িকাউনিয়া ও হরিষখালী এলাকার বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হওয়ায় লস্কারি খাজরা গ্রামে অবস্থিত তার ২৫০ বিঘার একটি চিংড়ি ঘেরও পানিতে তলিয়ে গেছে। ২৭ মে দুপুরের জোয়ারে ঐ দুই ভাঙন পয়েন্ট দিয়ে পানি ঢুকে প্লাবিত হয়ে তার সবকিছু শেষ হয়ে গেছে।
সাতক্ষীরা জেলা মত্স্য অফিসার মশিউর রহমান জানান, পূর্ণিমার ভরা জোয়ারে বেড়িবাঁধ ভেঙে ও ওভার ফ্লো হয়ে নদনদীর পানি লোকালয়ে প্রবেশ করায় সাতক্ষীরার শ্যামনগর, আশাশুনি ও দেবহাটা উপজেলার ২৯টি ইউনিয়নের ৭ হাজার ৫৬০টি মাছের ঘের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর আয়তন ৬ হাজার ৭৩৮ হেক্টর। এই খাতে মাছ এবং অবকাঠামোগত সব হিসাব মিলিয়ে প্রায় ৫৫ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া পূর্ণিমার ভরা জোয়ারে সাতক্ষীরার শ্যামনগর, আশাশুনি ও দেবহাটা উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকার চিংড়ি ঘের এখন পানির নিচে তলিয়ে রয়েছে।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এস এম মোস্তফা কামাল বলেন, এলাকা জুড়ে লাখো মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ক্ষয়ক্ষতি এখনো পুরোপুরি নিরূপণ করা যায়নি। তবে, বেড়িবাঁধ এবং মাছের ঘেরের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
নদী বন্দর / বিএফ