দেশের একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজননকেন্দ্র হালদা নদীতে দ্বিতীয় দফায় ডিম ছেড়েছে মা মাছ।
বুধবার (২ জুন) বিকেলে ৫টার দিকে ডিম ছাড়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হালদা গবেষক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মনজুরুল কিবরিয়া।
তিনি বলেন, ‘২৭ মে প্রথম দফায় ডিম ছাড়ার সময় ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের কারণে হালদার পানি প্রচুর লবণাক্ত ছিল। আবার নদীতে বৃষ্টিপাত, পাহাড়ি ঢল না থাকার কারণে অল্পসংখ্যক ডিম ছাড়ে মা মাছ। তাই আশা করা হয়েছিল হালদায় আবার বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢল নামলে মা মাছ ডিম ছাড়বে। আজ (বুধবার) জোয়ারে হালদায় দ্বিতীয় দফায় মা মাছ ডিম ছাড়ল। তবে এখনও নদীতে অল্পসংখ্যক ডিম পাওয়ার কথা জানিয়েছেন সংগ্রহকারীরা।’
ডিম সংগ্রহকারী আশু বড়ুয়া বলেন, ‘হালদায় দ্বিতীয় দফায় মা মাছ ডিম ছেড়েছে। আমরা নৌকা নিয়ে ডিম সংগ্রহে নেমেছি।’
নয়াহাট এলাকার ডিম সংগ্রহকারী কামাল সওদাগর বলেন, ‘আমরা এখন নদীতে ডিম সংগ্রহ করছি। প্রথম দফায় আমরা প্রত্যাশার চারভাগের একভাগ ডিমও পায়নি। এবার কিছু ডিম পেলে আমাদের ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে ওঠতে পারব।’
বছরের এপ্রিল থেকে জুনের যেকোনো সময়ে হালদা নদীতে মা মাছ ডিম ছাড়ে। তবে এক্ষেত্রে শর্ত হচ্ছে, পূর্ণিমা বা অমাবস্যার তিথি বা জো থাকতে হবে। একই সময়ে নদীর স্থানীয় এবং খাগড়াছড়ি, মানিকছড়িসহ নদীর উজানে পাহাড়ি এলাকায় প্রচুর বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হতে হবে।
ফলে পাহাড়ি ঢল নামবে এবং নদীতে ফেনাসহ পানি প্রবাহিত হবে। ঠিক এই সময়ে পূর্ণজোয়ার শেষে অথবা পূর্ণভাটা শেষে পানি যখন স্থির হয়, তখনই কেবল মা মাছ ডিম ছাড়ে।
খাগড়াছড়ির জেলার বাটনাতলী পাহাড় হতে নেমে সর্পিল ১০৬ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীতে মিলেছে হালদা। দেশের একমাত্র জোয়ার-ভাটার রুই জাতীয় মাছের প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজননকেন্দ্র এই নদীর সুরক্ষায় সরকার ইতোমধ্যে এটিকে বঙ্গবন্ধু হেরিটেজ ঘোষণা করেছে।
নদী বন্দর / পিকে