করোনাভাইরাস মহামারির কারণে বর্তমানে থমকে রয়েছে আন্তর্জাতিক পর্যটন। বিশ্বের বেশিরভাগ দেশেই চলছে কড়া ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা। ভয়ঙ্কর ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের উৎস ভারতও এর ব্যতিক্রম নয়। মহামারির দ্বিতীয় ঢেউয়ে পর্যুদুস্ত হয়ে পড়েছে তারা। তবে গণহারে টিকাদানের মাধ্যমে ধীরে ধীরে পরিস্থিতি সামলে উঠছে দেশটি। প্রায় আড়াই মাস পর সোমবার সেখানে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা হাজারের নিচে নেমেছে, কমেছে সংক্রমণের হারও। ফলে অর্থনীতি চাঙ্গা করতে শিগগিরই পর্যটন কেন্দ্রগুলো খুলে দেয়ার চিন্তা করছে ভারত সরকার। সেক্ষেত্রে বিদেশি পর্যটক টানতে বড়সড় চমকই দিয়েছেন ভারতীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামণ।
সোমবার তিনি ঘোষণা দিয়েছেন, আন্তর্জাতিক যাতায়াত ফের শুরু হওয়ার পর প্রথম যে পাঁচ লাখ বিদেশি পর্যটক ভারত ভ্রমণের আবেদন করবেন, তাদের কোনো ভিসা ফি দিতে হবে না। অর্থাৎ, আবেদনকারী প্রথম পাঁচ লাখ পর্যটকের জন্য ভারত ভ্রমণে ভিসা চার্জ পুরোপুরি ফ্রি।
করোনার আঘাত সামলে দেশের পর্যটন শিল্পকে দ্রুত চাঙ্গা করতে এটি ভারত সরকারের নতুন উদ্যোগ বলে মনে করা হচ্ছে।
জানা গেছে, এই নীতি জারি থাকবে ২০২২ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত। তবে, তার মধ্যেই যেদিন পাঁচ লাখ পর্যটকের কোটা পূরণ হয়ে যাবে, ফ্রি ভিসার অফারও সেদিনই শেষ হবে। একজন পর্যটক একবারই এই সুবিধা পাবেন।
উল্লেখ্য, ভারত ভ্রমণে গত কয়েক বছর ধরেই শীর্ষে বাংলাদেশিরা। ২০১৮ সালের শুরু থেকে পরবর্তী ১৫ মাসে ২৮ লাখ ৭৬ হাজার বাংলাদেশি ভারত ভ্রমণ করেছেন, যা অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় বেশি। ভারত ভ্রমণের দিক থেকে বাংলাদেশের পরেই রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকরা।
ভারতের পর্যটন মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, দেশটিতে বিদেশি পর্যটক যাওয়ার পরিমাণ ২০১৬, ২০১৭ ও ২০১৮ সালে ক্রমাগত বেড়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ও।
দেশটির ২৯টি রাজ্যের মধ্যে ২০১৮ সালে সবচেয়ে বেশি বিদেশি পর্যটক যান তামিলনাড়ুতে, এ সংখ্যা ৬০ লাখেরও বেশি। এরপরেই রয়েছে মহারাষ্ট্র ও উত্তর প্রদেশ। মহারাষ্ট্রে ২০১৮ সালে ৫০ লাখের বেশি পর্যটক যান, উত্তর প্রদেশে এ সংখ্যা ৩৭ লাখ।
২০১৭ সালে বাংলাদেশ থেকে ভারতে পর্যটক যাওয়ার পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। সে বছর মোট বাংলাদেশি পর্যটকের সংখ্যা ছিল ২১ লাখ ৫৬ হাজার ৫৫৭। তার আগের বছর এ সংখ্যাটা ছিল ১২ লাখ ৮০ হাজার ৪০৯। ২০১৮ সালে এ সংখ্যাটা বেড়ে হয় ২২ লাখ ৫৬ হাজার ৬৭৫।
সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস
নদী বন্দর / এমকে