পাট চাষীদের লোকসানের সম্ভাবনা না থাকায় দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে পাট চাষির সংখ্যা। এ বছর পাটের আবাদ বৃদ্ধি ও পাটের বাম্পার ফলন হওয়ায় চাষিদের মূখে হাসি ফুটলেও পানির অভাবে পাট জাঁগ (পঁচানো) নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার পাট চাষিরা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, দু’সপ্তাহ আগে কয়েক দিনের ভারি বৃষ্টিপাত হওয়ায় নদ-নদীসহ বিভিন্ন ঝলাশয়ে পানি ভরাট হওয়ায় প্রান্তিক কৃষকরা তাদের সোনানী আশ পাট কাঁটা শুরু করেছে। এরই মধ্যে অনেক চাষি পাট জাঁগ (পঁচানো) শুরুও করেছেন। ধরলা নদী, নীলকমল নদী ও বারোমাসিয়া নদীসহ বিভিন্ন খাল-বিলের নিকটবর্তী কৃষকরা পাট-জাঁগ দিচ্ছেন।
যে সব এলাকায় বড় বড় খাল-বিলসহ বিভিন্ন ডোবা ও নালার পানি শুকিয়ে যাওয়ায় ওই সব এলাকার কৃষকরা পাট কাঁটতে পারছে না। অনেকেই আবার ভারি বৃষ্টিপাতে বিভিন্ন ডোবা-নালায় পানি ভরাট হওয়ার আশায় পাট কাঁটা শুরু করলেও দুই সপ্তাহ ধরে বৃষ্টির দেখা না পেয়ে পানির অভাবে পাট জাঁগ (পঁচানো) নিয়ে কৃষকরা দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। অনেক কৃষক পাট কেঁটে জমির মধ্যেই রেখে দিয়েছেন পাটের আটি। আবার অনেক কৃষক বাধ্য হয়ে শ্যালো মেশিন ও মোটরের পানি দিয়ে পাট জাঁগ দিতে গিয়ে বাড়তি খরচ করছেন।
উপজেলার কুরুষাফেরুষা গ্রামের কৃষক,রনজিৎ কুমার রায় ও পুল্ল চন্দ্র রায় জানান,তারা দুজনেই দুই বিঘা করে জমিতে পাট চাষ করেছেন। অন্য বছরের তুলনায় এবছর পাটের বাম্পার ফলনও হয়েছে। কিন্তু গত ১৫ দিন আগে বৃষ্টির পানিতে ডোবা-নালা ভরাট হলেও তা ধীরে ধীরে শুকিয়ে যায়। তাই বাধ্য হয়ে আমরা শ্যালো মেশিনের পানি পাট জাঁগ দিয়েছি। সাত থেকে ৮ দিন ধরে প্রতিদিন দেড় কেজি তেলের পানি দিতে হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহবুবুর রশিদ জানান,এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় পাটের ফলন ভালো হয়েছে। পাটের বীজ বপনের সময় আবহাওয়া অনুকূলে না থাকলেও পরবর্তীতে বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় আগাছা কম হয়েছে। এ বছর উপজেলায় ৭শ ৪৫ হেক্টর জমিতে পাট চাষের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে । তবে মাঠ পর্যায়ে এর চেয়েও বেশি অর্থাৎ ১ হাজার ২ শ ৫০ হেক্টর জমিতে পাট চাষ করেছেন প্রান্তিক কৃষকরা।
ইতি মধ্যে সাড়ে ৩শ হেক্টর জমির পাট কৃষকরা কর্তন করেছেন। তবে বৃষ্টির না হওয়ায় কৃষকরা শ্যালো ও মোটর দিয়ে পাট জাঁগ দিচ্ছেন। আশা আগামী শুক্র-শনিবার বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বৃষ্টি হলে পানির সংকট কেঁটে গেলে আমাগী ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে সকল পাট কর্তন ও জাঁগ দিতে পারবে কৃষকরা।
নদী বন্দর / বিএফ