ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় পৌনে এক কিলোমিটারের কম দৈর্ঘ্যর একটি রাস্তার কাজ চার মাসের মধ্যে শেষ করার শর্ত থাকলেও দীর্ঘ দুই বছরেও তা শেষ হয়নি। এ নিয়ে স্থানীয়দের যেন ভোগান্তির অন্ত নেই।
২০১৯ সালের ৯ এপ্রিল সড়কটির পাকাকরণের কাজ শুরু হয়। শর্ত অনুযায়ী ওই বছরের আগস্টের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা থাকলেও তা এখনো শেষ হয়নি। কবে নাগাদ শেষ হবে তা নিয়েও দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার টগরবন্দ ইউনিয়নের চাপুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় হতে ওই এলাকার খালেক ফকিরের বাড়ি পর্যন্ত ৬৬৮ মিটারের একটি রাস্তা পাকাকরণের জন্য কোনো রকমে রোলার করে ফেলে রাখা হয়েছে। দীর্ঘদিন এ অবস্থায় রোলার করে রাখার কারণে ইট-পাথরের ছোট-বড় খোয়া উঠে যানবাহন চলাচলে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এতে প্রতিনিয়ত সাইকেল, মোটরসাইকেল, অটোভ্যান ও ভারী যানবাহনের টায়ার নষ্ট হচ্ছে। কুচরি ইট-পাথরের ওপর ব্রেক করতে গিয়ে ঘটছে ছোটোখাটো দুর্ঘটনা।
সংশ্লিষ্ট অফিসে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় প্রায় দুই বছর আগে দরপত্রের মাধ্যমে ফরিদপুরের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স প্রত্যাশা এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী সাজ্জাদ হোসেন বরকত রাস্তাটির কার্পেটিং কাজ করার চুক্তিবদ্ধ হন। ২০১৯ সালের ৯ এপ্রিল সড়কটির পাকাকরণের কাজ শুরু হয়।
এরপর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক সাজ্জাদ হোসেন বরকত বিভিন্ন অপরাধ-অপকর্মের কারণে গ্রেফতার হন। এরপর ওই প্রতিষ্ঠানকে কাজ শেষ করার জন্য বারবার তাগিদ দেয়া হয়। পরে সাড়া না পেয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি) এ কাজের কার্যাদেশ বাতিল করেন। এরপর থেকে নতুনভাবে কোনো দরপত্র আহ্বান করেনি সংশ্লিষ্ট দপ্তরটি।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. ইরান মোল্যা, শাহিন, শ ম কলিন্স জানান, এ রাস্তা দিয়ে কয়েক গ্রামের লোকজন হেঁটে ও যানবাহনে চলাচল করে। রাস্তায় নামমাত্র কংক্রিট দেয়া হলেও গাড়ি চলাচলের কারণে কংক্রিটগুলো গুঁড়ো হয়ে মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। দুই বছর হলেও কার্পেটিংয়ের কাজ শুরু হয়নি। ফলে সামান্য বৃষ্টিতেই রাস্তাটি কর্দমাক্ত হয়ে যায়। বয়স্ক লোকজন ও রোগীদের চলাচল করতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
আলফাডাঙ্গা উপজেলা প্রকৌশলী মো. রাহাত ইসলাম জানান, রাস্তাটি আমাদের এলজিইডি-এর আওতাধীন একটি নির্মাণাধীন সড়ক। ওই সড়কের কাজ পাওয়া ঠিকাদার জেলে থাকার কারণে তার সঙ্গে আমরা চুক্তি বাতিল করেছি। বর্তমানে একজন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে রাস্তাটি আবার রি-মেজারমেন্ট করে নতুন ঠিকাদার নির্বাচন করা হবে।
নদী বন্দর / এমকে