কঠোর লকডাউন শিথিলের প্রথম দিনে মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাটে ঘরমুখো মানুষ ও যানবাহনের ঢল নেমেছে। আজ বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই) সকাল থেকেই রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছোট-বড় যানবাহনে চড়ে যাত্রীরা ঘাটে উপস্থিত হচ্ছেন। এতে বাড়তি যানবাহনের চাপ পড়ায় ফেরিতে যানবাহন পারাপারে বেগ পেতে হচ্ছে।
অতিরিক্ত চাপের কারণে ঘাটে পণ্যবাহী ট্রাক এবং ব্যক্তিগত ও গণপরিবহনে আসা যাত্রীদের অপেক্ষা করতে হচ্ছে দীর্ঘক্ষণ।
এদিকে আজ সকাল থেকে শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুটে লঞ্চ চলাচল শুরু হওয়ায় ফেরিতে যাত্রীর চাপ ও গাদাগাদি কমে এসেছে। তবে লঞ্চগুলোতে মানা হচ্ছে না নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি। অর্ধেক যাত্রী নেয়ার কথা থাকলেও অধিক যাত্রী নিয়েই সেগুলো চলাচল করছে।
অন্যদিকে গণপরিবহন চালু হওয়ায় ঘাটে আসতে সড়ক পথে যাত্রীদের দুর্ভোগ কমেছে। ঘাট কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, যানবাহন ও যাত্রী পারাপারে নৌরুটে ১০টি ফেরি ও ৭৮টি লঞ্চ চলাচল করছে।
যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মূলত আসন্ন ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে আগেই বাড়ির পানে ছুটছেন তারা।
বাগেরহাটগামী যাত্রী ওবায়দুল হাওলাদার জানান, করোনা রোধে লকডাউনের কারণে গত ঈদে বাড়ি যেতে পারিনি। তাই এবার আগেভাগেই চলে যাচ্ছি। বাড়িতে স্বজনদের সঙ্গে ঈদ করব।
বরিশালগামী যাত্রী রবিউল বলেন, ‘ঈদের আগের ২-১ দিন ফেরিতে খুব চাপ হয়। তাই এখনই চলে যাচ্ছি। ঈদের পর ফিরে আসব।’
রবিনা আক্তার নামে একজন নারী বলেন, ‘গতবার ঈদে অনেক মানুষের চাপ ছিল, চাপাচাপিতে মানুষ মারাও গেছে। তাই এবার আগেই সন্তানদের নিয়ে গ্রামে যাচ্ছি। কেরানীগঞ্জ থেকে বরিশাল যাচ্ছি। বাসে আসছি, রাস্তায় তেমন কষ্ট হয়নি।’
বিআইডাব্লিউটিএ’র শিমুলিয়া নদী বন্দরের কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন জানান, নৌরুটে বর্তমানে ৭৮টি লঞ্চ দিয়ে যাত্রী পারাপার করা হচ্ছে। নিয়ম অনুযায়ী ৬০ ভাগ যাত্রী নিয়ে লঞ্চ চালানোর জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তবে প্রচুর যাত্রীর সমাগম ঘটছে। তাদেরকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে লঞ্চে উঠার জন্য উৎসাহিত করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে বিআইডাব্লিউটিসি শিমুলিয়াঘাটের ব্যবস্থাপক ফয়সাল আহমেদ জানান, নৌরুটে বর্তমানে ১০টি ফেরি সচল রয়েছে। ঘাট এলাকায় পারাপারের জন্য যাত্রী ও পণ্যবাহী মিলিয়ে ৫ শতাধিক যানবাহন রয়েছে। পর্যায়ক্রমে সকল যানবাহন পারাপার করা হবে। লঞ্চ চালু হওয়ায় ফেরিতে যাত্রী চাপ কমেছে। তবে গণপরিবহন ও প্রচুর ব্যক্তিগত গাড়ি ঘাটে আসায় পণ্যবাহী ট্রাক পারাপারে বেগ পেতে হচ্ছে।
মাওয়া নৌ-পুলিশের ইনচার্জ সিরাজুল কবির জানান, ‘ঈদকে কেন্দ্র করে বিধিনিষেধ শিথিল হওয়ায় প্রচুর যাত্রী ও যানবাহন ঘাটে আসছে। নৌযানগুলোতে নিয়ম অনুযায়ী যাত্রী পারাপারের জন্য নৌ-পুলিশ তদারকি করছে। যেসব লঞ্চে অধিক যাত্রী ধারণ করা হচ্ছে ও নিয়ম অমান্য করছে, তাদের বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।’