চলমান কঠোর বিধিনিষেধে ফেরিতে যাত্রী ও ব্যক্তিগত গাড়ি পারাপারে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুটে মানা হচ্ছে না এই নিয়ম। বিধিনিষেধের পঞ্চম দিন মঙ্গলবারও (২৭ জুলাই) এই রুটের প্রতিটি ফেরিতেই শতশত যাত্রী ও ব্যক্তিগত গাড়িকে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে পদ্মা পারি দিতে দেখা গেছে।
এদিকে লকডাউন বাস্তবায়ন ও ফেরিতে যাত্রী চলাচল নিয়ন্ত্রণে ঘাটের অভিমুখে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। তবে তা অতিক্রম করতে যাত্রীরা নানা অজুহাত দেখাচ্ছেন।
সরেজমিন ঘাট এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বাংলাবাজার থেকে শিমুলিয়া ঘাটে আসা প্রতিটি ফেরিতে যানবাহনের পাশাপাশি যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড়। প্রতিটি ফেরিতেই শতশত ঢাকামুখী যাত্রী। আছে মোটরসাইকেলের ঢলও। আবার শিমুলিয়া হয়ে বাংলাবাজার যাচ্ছেন দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলগামী যাত্রীরা। তবে ফেরিতে দক্ষিণবঙ্গগামী যাত্রীদের চেয়ে ঢাকামুখী যাত্রীদের ভিড় বেশি। এতে ফেরিতে মানা হচ্ছে না সামাজিক দূরত্ব; উপেক্ষিত হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধিও।
এদিকে, যানবাহন না পেয়ে বাংলাবাজার থেকে শিমুলিয়াঘাটে আসা ঢাকামুখী যাত্রীরা গন্তব্যের উদ্দেশে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিচ্ছেন পায়ে হেঁটেই। এ বিষয়ে ডজনখানেক যাত্রীর সঙ্গে জাগো নিউজের কথা হলে সবাই জানান, প্রয়োজনের তাগিদেই বিধিনিষেধ ভঙ্গ করে ফেরিতে চড়েছেন তারা।
মাদারীপুর থেকে ঢাকাগামী যাত্রী নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি সৌদি আরব যাব। তাই করোনা টিকা দিতে ঢাকায় যাচ্ছি। টিকা না নিলে ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। টিকা নেয়ার জন্যই বের হয়েছি।’
আরেক যাত্রী লুৎফর রহমান বলেন, ‘সবাই তো যাচ্ছে, তাই আমিও যাচ্ছি। বাড়িতে বসে থাকলে তো কেউ খাবার দেবে না। ঢাকায় চাকরি করি, সেখানে মালিক-মহাজন যাওয়ার জন্য বলছে তাই প্রয়োজনের তাগিদেই যাচ্ছি।’
ফয়সাল হোসেন বললেন, ‘আমি ব্যাংকে কাজ করি। তাই চাকরিতে যাচ্ছি। পথে দুই জায়গায় পুলিশের চেকপোস্ট পড়েছিল সেখানে আইডি কার্ড দেখিয়েছি। তখন আসতে দিয়েছে।’
এক নারী যাত্রী উম্মে হামিদা বলেন, ‘আমার স্বামী চাকরি করে। না গেলে চাকরিতে সমস্যা তাই ঢাকা যাচ্ছি। ভেঙে ভেঙে আসতে অনেক কষ্ট হচ্ছে কিন্তু কী করবো, চাকরি না করলে আমাদের সংসার চলবে কী করে?’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিআইডব্লিউটিসি শিমুলিয়া ঘাটের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মো. ফয়সাল বলেন, ‘শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুটে চারটি রোরো, তিনটি মিডিয়াম ও একটি ছোট ফেরি চলাচল করছে। জরুরি ও লকডাউনের আওতার বাইরে থাকা যানবাহন পারাপারে এসব ফেরি সচল রাখা হয়েছে।’
নদী বন্দর / জিকে