নরসিংদীর রায়পুরায় প্রবাসীর স্ত্রীকে টিকা দেয়ার কথা বলে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ, পরে শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুনে পুড়িয়ে মারার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। নিজ দেবর ও ননদদের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ এনেছেন অগ্নিদগ্ধ ওই নারী (৩০)।
শনিবার (৭ আগস্ট) দিবাগত রাত ৩টার দিকে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ঢাকার শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় অভিযুক্ত দেবরসহ দুইজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রায়পুরা উপজেলার উত্তরবাখর নগর ইউনিয়নের লোচনপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্র জানায়, ওই নারীর সঙ্গে মরজাল এলাকার এক প্রবাসীর বিয়ে হয়। তাদের দাম্পত্য জীবনে ১০ বছর বয়সী এক কন্যাসন্তান রয়েছে। স্বামী প্রবাসের থাকার কারণে প্রায় সময়ই ওই নারী ও তার সন্তানকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন নির্যাতন করতেন। বছরখানেক আগে দেবর আলী হোসেন ওই নারীর মেয়ের পায়ে দা দিয়ে কোপ দেন। এ ঘটনায় একটি মামলা হয়। এরপর থেকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন মামলা তুলে নিতে চাপ দিতে থাকেন। এতে রাজি না হওয়ায় নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে যায়। এক পর্যায়ে ওই নারী স্বামীর বাড়ি ছেড়ে বাবার বাড়ি চলে আসেন।
শনিবার টিকা দেয়ার কথা বলে ওই নারীকে বাবার বাড়ি শ্বশুরবাড়িতে ডেকে নিয়ে আসা হয়। বিকেলে দেবর আলী হোসেন, ননদের ছেলে শাহরিয়ার, ননদ তাসলিমা বেগম ও জা রহিমা বেগমের সঙ্গে টিকাদানের উদ্দেেশ্যে সিএনজিযোগে বের হন। কিছুদূর যাওয়ার পর ওই নারীর চোখ বেঁধে ফেলা হয়। পরে নির্জন এক স্থানে নিয়ে তাকে ধর্ষণ করেন দেবর আলী হোসেন।
ধর্ষণ শেষে রায়পুরা-বারৈচা সড়কের পাশে লোচনপুর এলাকার একটি বাঁশঝাড়ের পাশে নিয়ে যাওয়া হয় ওই নারীকে। সেখানে শরীরে তরল জাতীয় কিছু ছিটিয়ে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়। পরে তার আর্তচিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করে রায়পুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাত ৩টার দিকে ঢাকা শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় অভিযুক্ত দেবর আলী হোসেন ও ননদের ছেলে শাহরিয়ারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
রায়পুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত চিকিৎসক এ কে এম রেজাউল ইসলাম খান জানান, ওই নারীর পায়ের আঙুল থেকে গলা পর্যন্ত প্রায় ৮০ ভাগ পুড়ে গেছে।
রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তফা বলেন, এ ঘটনায় দেবরসহ দুইজনকে আটক করা হয়েছে। মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।
নদী বন্দর / এমকে