বিশ্বের তৃতীয় ব্যস্ততম কার্গো বন্দরের একটি টার্মিনালের কার্যক্রম স্থগিত বন্ধ করে দিয়েছে চীন। বিশ্বের সবচেয়ে ব্যস্ত কার্গো বন্দরগুলোর মধ্যে অন্যতম ওই বন্দরের এক শ্রমিকের দেহে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ফলে করোনা মহামারির কারণে ইতোমধ্যেই ভঙ্গুর হয়ে পড়া সাপ্লাই চেন এবং বৈশ্বিক বাণিজ্যের আরও বেশি ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে বলে ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে
বুধবার নিংবো-জৌশান বন্দরের মেইশান টার্মিনালে কন্টেইনার আনা নেয়া স্থগিত করা হয়। ওই বন্দরের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, পরবর্তী নোটিশ না দেয়া পর্যন্ত এই কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। পূর্বাঞ্চলীয় ওই চীনা শহরের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বন্দরের এক কর্মীর করোনা পজিটিভ ধরা পড়েছে।
নিরাপত্তা পরামর্শক গার্ডাওয়ার্ল্ডের হিসেব অনুযায়ী, নিংবো-জৌশান বন্দরের মেইশান টার্মিনালে প্রায় ২৫ শতাংশ কন্টেইনার কার্গো হ্যান্ডেলিং করা হয়। সংস্থাটি বলছে, টার্মিনাল বন্ধ রাখার কারণে কনটেইনার পরিবহন এবং জাহাজ চলাচলের ক্ষেত্রে বড় ধরনের প্রভাব পড়বে।
জার্মানির আন্তর্জাতিক জাহাজ এবং কন্টেইনার পরিবহন কোম্পানি হ্যাপ্যাং-লিয়ড এজি জানিয়েছে, এর ফলে জাহাজগুলোর বন্দরে নোঙর করতে অনেক বেশি সময় লেগে যাবে এবং ব্যবসায়িক কার্যক্রম ব্যাহত হবে।
এর আগেও করোনাভাইরাসের কারণে চীনের আরও একটি বন্দর বন্ধ রাখা হয়। গত মে মাসের শেষের দিকে শেনঝেনের ইয়ানতিয়ান বন্দর এক মাসের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছিল।
মেইশান টার্মিনাল বন্ধের কারণে আন্তর্জাতিক জাহাজ চলাচল ও পণ্য পরিবহন ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। দীর্ঘদিন ওই বন্দর বন্ধ রাখার কারণে বিশ্বের অর্থনীতিতে মারাত্মক ক্ষতির হুমকি তৈরি হয়েছে।
নিংবো শহরের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, সম্প্রতি আক্রান্ত হওয়া কর্মীর সঙ্গে সম্পর্কিত সবাইকে ইতোমধ্যেই কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। তবে বন্দরের এক মুখপাত্র ওই কর্মীর নাম জানাননি।
মেরিটাইম পাবলিকেশন্স লিয়ডের তালিকা অনুযায়ী, কন্টেইনার পরিবহনে ২০২০ সালে বিশ্বের তৃতীয় এবং চীনের শাংহাইয়ের পর দ্বিতীয় ব্যস্ত বন্দর ছিল নিংবো-জৌশান বন্দর।
এদিকে স্থানীয় সরকার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বন্দর কর্মীর করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ার ঘটনা এটা প্রমাণ করে যে, নিংবো শহরে করোনার বিধিনিষেধ ঠিকভাবে মেনে চলা হচ্ছে না। ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে কোয়ারেন্টাইন, জীবাণুমুক্তকরণ এবং ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার সঙ্গে অন্যান্য এলাকার সংযোগ বিচ্ছিন্ন রাখার বিষয়গুলো কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করতে কর্মকর্তাদের আহ্বান জানানো হয়েছে।
নদী বন্দর / এমকে