করোনা পরিস্থিতিতে প্রায় পাঁচ মাস ধরে বন্ধ আছে রাঙ্গামাটির সব পর্যটন ও বিনোদন কেন্দ্র। এতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে খাত সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের। অবশেষে আগামী ১৯ আগস্ট থেকে পর্যটন কেন্দ্র খুলে দেয়ার ঘোষণায় আশায় বুক বাঁধছেন তারা।
পর্যটকদের বরণ করে নিতে পর্যটন স্পটগুলোতে প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। হোটেল-মোটেলগুলোতে ধোয়ামোছার কাজ চলছে। কোথাও কোথাও চলছে সংস্কার কাজও। পাশাপাশি বাগানগুলো পরিষ্কার করা হচ্ছে।
শহরের যান্ত্রিকতা ছেড়ে ভ্রমণপিপাসুরা ছুটে আসতেন পাহাড় ও হ্রদে ঘেরা মনোরম প্রকৃতির লীলাভূমি পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটিতে। তাদের পদচারণায় মুখর থাকতো পাহাড়ি এই জনপদ।
রাঙ্গামাটিতে পর্যটকদের জন্য দেখার মতো রয়েছে- সাজেক ভ্যালি, ঝুলন্ত সেতু, কাপ্তাই লেক, পলওয়ে পার্ক, আরণ্যক ও সুবলং ঝর্ণাসহ আরও অনেক দর্শনীয় স্থান।
রাঙ্গামাটি পর্যটন ট্যুরিস্ট বোট ঘাটের ইজারাদার মো. রমজান আলী বলেন, গত বছর থেকে বোর্ড মালিক ও চালকরা মানবেতর জীবনযাপন করছে। মাঝখানে কিছুদিন পর্যটক আসলেও এ বছরের ১ এপ্রিল থেকে পর্যটন ও বিনোদনকেন্দ্র আবারও বন্ধ ঘোষণা করে জেলা প্রশাসন। আমাদের ঘাটে প্রায় শতাধিক ট্যুরিস্টবোট রয়েছে। তবে আগামী ১৯ আগস্ট থেকে পর্যটন খুলে দেয়ার সিদ্ধান্তে আশার আলো দেখছেন বোট ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা। পর্যটকরা রাঙ্গামটি ভ্রমণ করলে অন্তত গত মাড়ে চার মাসের ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে নেয়া সম্ভব হবে।
হোটেল গ্রীন ক্যাসেলের ব্যবস্থাপক আহমেদ ইমতিয়াজ ও হোটেল মতি মহলের ব্যবস্থাপক চন্দন কুমার দে জানান, দীর্ঘ সময় পর হোটেল-মোটেল খুলে দেয়ার ঘোষণা কিছুটা আশার আলো দেখছি। আশা করছি সামনের সময়গুলোতে আর লকডাউন দেয়ার সম্ভাবনা নেই। সে হিসেবে পর্যটকরা রাঙ্গামাটি আসলে আমাদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারব। আমরা স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে হোটেল ব্যবসা পরিচালনা করার জন্য শতভাগ প্রস্তুতি নিয়েছি।
রাঙ্গামাটির অন্যতম আকর্ষণীয় বিনোদনকেন্দ্র শহরের পলওয়েল পার্কও পর্যটকদের পদচারণায় মুখর থাকে। পলওয়েল পার্ক ঘুরে দেখা যায়, পার্কের সংস্কার কাজ চলছে। বাগানগুলো পরিষ্কার করা হচ্ছে।
কর্তৃপক্ষ জানায়, আগামী ১৯ আগস্টের পূর্বেই সব ধরনের সংস্কার কাজ শেষ করা হবে।
রাঙ্গামাটি পর্যটন করপোরেশনের ব্যবস্থাপক সৃজন বিকাশ বড়ুয়া বলেন, প্রতি মাসে অফিস স্টাফদের বেতন ও রক্ষণাবেক্ষণ যে খরচ হচ্ছে তা দেয়ার সামর্থ্য নেই আমাদের। পরিস্থিতি ভালো থাকার সময় প্রতি মাসে ২৫-৩০ লাখ টাকার মতো আয় হতো। কোনো কোনো মাসে আরও বেশি হতো।
তিনি আরও বলেন, দীর্ঘ সাড়ে চারমাস বন্ধ থাকার পর পর্যটন খুলে দেয়ার খবরে আশাবাদী হচ্ছি। সামনের সময়গুলোতে করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে থাকলে পর্যটক আসবে আর পর্যটকদের সেবা দিতে আমরা শতভাগ প্রস্তুত রয়েছি।
জেলা ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কৃষ্ণ কুমার সরকার বলেন, সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়নে ট্যুরিস্ট পুলিশ কঠোর অবস্থানে থাকবে।
নদী বন্দর / পিকে