২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন জনগণের আস্থা অর্জনে পরিপূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে বলে অভিমত প্রকাশ করে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ বলেছে, ‘একটি সুষ্ঠু অবাধ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন করতে যে পরিবেশ থাকা দরকার, তা একেবারেই ছিল না বাংলাদেশের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে। ভোটের দিন ঘোষণার পর বিভিন্ন জায়গায় যেভাবে সংঘাত-সংঘর্ষ হয়েছে তাতে ভোটের পরিবেশ ব্যাহত হয়। আর ৩০ ডিসেম্বরের আগের রাতের ঘটনার ফলে জনগণ ভোট দেয়ার সব আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। যার প্রমাণ ৩০ ডিসেম্বর পরবর্তী উপজেলা, সিটি করপোরেশন, উপনির্বাচনসহ সর্বশেষ পৌর নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতিই তার যথেষ্ট প্রমাণ।’
মঙ্গলবার (২৯ ডিসেম্বর) গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে পার্টির চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া এসব কথা বলেন।
তারা বলেন, ‘ভোটের ওপরে মানুষের আস্থা নেই। ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের পর মানুষ ভোটের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলেছে। তারা (জনগণ) মনে করছেন ভোট দিয়ে আর লাভ কী? ছুটি পেয়েছি ঘুমাই। মানুষের মনের মধ্যে একটা কথা, আমি গেলেই কী, না গেলেই কী? এই রকম ধারণা যখন জন্মে তখন ভোটের প্রতি মানুষের আগ্রহ থাকে না। যা গণতন্ত্রের জন্য শুভ নয়।’
নেতৃদ্বয় বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে জনগণ আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। গত দুই বছরের সব নির্বাচনেই তার প্রমাণ পাওয়া যায়। মসজিদে মসজিদে ঘোষণা দিয়েও ভোটারদের আনা যায় না। এটা নির্বাচনের জন্য শুধু নয়, গণতন্ত্রের জন্যও বিপজ্জনক। এমনকি সরকারি দলের প্রার্থীদের অভিজ্ঞতাও করুণ। নির্বাচন কমিশন, প্রশাসনিক কর্মকর্তারাও এই বিষয়ে কোনো ধরনের গুরুত্ব দিচ্ছেন না। এর ফলে নির্বাচন ও সামগ্রিক নির্বাচন ব্যবস্থা সম্পর্কে জনমনে অনাস্থা সৃষ্টি হয়েছে। ভোট দেয়ার ব্যাপারে জনগণ আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে।’
তারা বলেন, ‘৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন সম্পর্কে বিরোধী দল ছাড়াও ১৪ দলের শরিক বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি ও বাংলাদেশ জাসদও বলেছেন, ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে রাতের বেলায় ভোট হওয়ায় নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। এরপর এই দিনকে কেন্দ্র করে সরকারি দলের ‘গণতন্ত্রের বিজয় দিবস’ পালন করা কতটুকু নৈতিক? অন্যদিকে যারা ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করে পরে আবার শপথ গ্রহণের মাধ্যমে সংসদে গিয়েছেন তাদেরও বা এদিনে ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ পালন করা কতটুকু নৈতিকতা বহন করে তা ভেবে দেখতে হবে। আজকের এই পরিস্থিতির জন্য তারাও তাদের দায় এড়াতে পারে না। শুধুমাত্র সরকারের কাঁধে দোষ চাপিয়ে নিজেদের রক্ষা করা যাবে না।’
নেতৃদ্বয় বলেন, ‘গত দুই বছরে দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা নির্বাসনের পথে পা দিয়েছে। নির্বাচনের প্রতি ভোটারদের দিন দিন অনাগ্রহ বৃদ্ধি পাওয়া এবং নিরুৎসাহ দেখা দিয়েছে। গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর মানুষ নির্বাচন ব্যবস্থা ও নির্বাচন কমিশনের ওপর আস্থা হারিয়ে ফেলেছে। এই ‘নির্বাচন বিমুখতা’ শেষ অবধি গণতন্ত্র বিমুখতায় পর্যবসিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। নির্বাচন নিয়ে ভোটারদের এমন অনাগ্রহ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার জন্য ইতিবাচক নয়। সুতরাং গণতন্ত্রের স্বার্থেই সব রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধভাবে এই অবস্থা অবসানের লক্ষ্যে কাজ করতে হবে।’