পদ ছেড়ে দিয়ে সব দল নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জাতীয় সরকার গঠনের দাবি জানিয়েছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
‘আন্তর্জাতিক গুম দিবস’ উপলক্ষে সোমবার (৩০ আগস্ট) জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘মায়ের ডাক’ নামে একটি সংগঠন আয়োজিত আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ দাবি জানান। সভায় বিভিন্ন সময় গুম হয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘প্রতি বছর আসি, লজ্জায় আমার মাথা নুইয়ে আসে। যারা গুম হয়েছেন তারা কোথায় আছেন, কী হয়েছে- প্রত্যেকটি তথ্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানেন। কেন বলছি এ কথা; তাকে এ তথ্য সরবরাহ করে ভারতীয় গোয়েন্দা বাহিনী ‘র’, বাংলাদেশের র্যাব…সব তথ্যই তার কাছে আছে।’
‘এ কথাটা কেন বলছি? আমাকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী রাজিব গান্ধী আলাপ করার জন্য ডেকে নিয়ে গিয়েছিলেন। উনি আমাকে বলেছিলেন জাফরুল্লাহ সাহেব, তুমি তো কেবল ‘র’ এর কথা জানো। আমাকে আটটি গোয়েন্দা বাহিনীর ফাইল পড়তে হয়। তাই আমি নিশ্চিত, তাহাজ্জুদের নামাজ পড়ার পর আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও আটটি বা ছয়টি এ ধরনের ফাইল খুলে থাকেন। প্রত্যেকটি তথ্য উনার জ্ঞাত।’
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের এ প্রতিষ্ঠাতা আরও বলেন, ‘তিনি (প্রধানমন্ত্রী) তাহাজ্জুদের নামাজের পর যে মাফ চান, তার কোনো মাফ গৃহীত হবে না; যদি না যাদের গুম করেছেন তাদের সব তথ্য প্রকাশ না করেন।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রধান বিচারপতির নৈতিক দায়িত্ব বিবেকের কর্তব্য প্রধানমন্ত্রীকে এজলাসে দাড় করিয়ে সর্বসম্মুখে জিজ্ঞাসা করা- এসব (গুম হওয়া) ব্যক্তির তথ্য। তিনি (প্রধান বিচারপতি) যদি সেটা না করতে পারেন, তবে তার কোনো অধিকার নেই এতো গুরুত্বপূর্ণ হাইকোর্টের ওই আসনে বসার।’
‘আজকে এ জিনিসের (গুম) অবসান প্রয়োজন। সেজন্য প্রাক্তন বিচারপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদ সাহেব, এ টি এম আফজাল, এমনকি ফজলুল করিমও হতে পারেন, এর সঙ্গে আমাদের অধ্যাপক আসিফ নজরুলকে নিয়ে একটি কমিটি করে তদন্ত কমিটি করে এটা পরিষ্কার করা হোক। জাতিকে পরিষ্কার করে বলুক এ ঘটনার আর পুনরাবৃত্তি হবে না।’
‘আমি সবসময় তার (প্রধানমন্ত্রী) মঙ্গল কামনাই করি। তার পিতার মৃত্যুতে আওয়ামী লীগের লোকজন কাঁদেনি। কিন্তু অজান্তে আমি কেঁদেছিলাম। তাই উনার ব্যাপারে এ জাতীয় ঘটনা প্রত্যাশা করি না’—বলেন জাফরুল্লাহ।
জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘দোয়া করি উনি (প্রধানমন্ত্রী) সুস্থ থেকে ভালোভাবে দেশটাকে সঠিক পথে নিয়ে যাওয়ার জন্য পদ ছেড়ে উনার বোন (শেখ রেহানা), মতিয়া চৌধুরীসহ আরও অন্যান্য বিরোধী দলের লোকজনকে এনে একটা জাতীয় সরকার করে সুন্দর, সুশাসনের বাংলাদেশ গড়ে তুলবেন। তাহলেই উনি ইতিহাসের পাতায় থাকবেন।’
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা আরও বলেন, ‘অযথা অন্যের কবরে লাশ আছে কি-না, তা নিয়ে ফাজলামি, পাগলামির বক্তব্য দিয়েন না। খোদা আপনার মঙ্গল করুক।’
অনুষ্ঠানে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বক্তৃতা করেন।
এতে সভাপতিত্ব করেন নিখোঁজ তেজগাঁও ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাজেদুল ইসলাম সুমনের বড় বোন মারুফা ইসলাম ফেরদৌসী।
নদী বন্দর / এমকে