ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে নৌকাডুবিতে ২৩ জন নিহতের ঘটনায় গ্রেফতার পাঁচজন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দিতে ওই নৌপথের ইজারাদার মিষ্ঠু মিয়া আদালতে জানিয়েছেন, এ নৌপথের কোনো নৌকার রুট পারমিট নেই। রুট পারমিট নিলে বয়া, লাইফ জ্যাকেট কিনে নৌকায় রাখতে হয়। রুট পারমিটের সঙ্গে বয়া-লাইফ জ্যাকেট থাকলে মানুষ মারা যেতো না।
পাঁচ আসামির জবানবন্দি দেওয়ার বিষয়টি সোমবার (৬ সেপ্টেম্বর) নিশ্চিত করেছেন বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মির্জা মো. হাসান। তিনি জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আনোয়ার সাদাত রোববার (৫ আগস্ট) বিকেলে পাঁচ আসামির জবানবন্দি গ্রহণ করেন।
প্রতি বছর বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসে নিলাম ডেকে উপজেলার চম্পকনগর-আনন্দবাজার নৌপথের চম্পকনগর ঘাট এক বছরের জন্য ইজারা দেওয়া হয়। এ বছর দুই লাখ ১০ হাজার টাকার ডাক ওঠে। নৌকা ঘাটের ডাকের টাকা মসজিদে খরচ করা হয়। প্রায় আট বছর ধরে এই ঘাটের ইজারা পাচ্ছেন মিষ্ঠু মিয়া। ওই ঘাট থেকে তার একটি যাত্রীবাহী নৌকাও চলাচল করে। চম্পকনগর ঘাট থেকে আনন্দবাজার ঘাট পর্যন্ত প্রতিদিন ১৪টি ইঞ্জিনচালিত যাত্রীবাহী নৌকা চলাচল করে।
নৌকাডুবির ঘটনায় গ্রেফতার মিষ্ঠু মিয়া আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বলেন, এই নৌপথে সরকারের কোনো অনুমতি নেই। দুর্ঘটনা কবলিত যাত্রীবাহী নৌকার মালিক ও দুর্ঘটনার সময় যারা নৌকা চালাচ্ছিলেন তাদের নাম-ঠিকানাও জানান মিষ্ঠু মিয়া।
গ্রেফতার হওয়া বালুবোঝাই ট্রলারের দুই মাঝি, সহযোগী ও মালিকরা তাদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বলেছেন, যাত্রীবাহী নৌকাটি দ্রুতগতিতে যাচ্ছিল।
নৌকাডুবির ঘটনার পরদিন বিজয়নগরের চম্পকনগরের সেলিম মিয়া নামে এক ভুক্তভোগী সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। পরে এ মামলায় ধাক্কা দেওয়া বালুবাহী বাল্কহেডের মাঝি, তার দুই সহযোগী, বাল্কহেডের মালিক ও চম্পকনগর নৌঘাটের ইজারাদারকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বাকি দুজনকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা যায়।
গত ২৭ আগস্ট বিকেল সোয়া ৫টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার লইস্কা বিলে বালুবোঝাই ট্রলারের ধাক্কায় নৌকাটি ডুবে যায়। এ ঘটনায় ২৩ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
নদী বন্দর / পিকে