মঙ্গলবার (৭ সেপ্টেম্বর) শরীয়তপুরের সুরেশ্বর পয়েন্টে পদ্মা নদীর পানি বিপৎসীমার ৮০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের গেজ রিডার (পানি পরিমাপক) শিল্পী মোবাইল ফোনে এ তথ্য জানান।
এতে শরীয়তপুরের জাজিরা ও নড়িয়া উপজেলার প্রায় ২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া জেলার জাজিরা, নড়িয়া ও ভেদরগঞ্জ উপজেলায় ৪৫টি স্কুল মাঠে পানি উঠেছে ও নড়িয়া উপজেলার ৮টি স্কুলের ক্লাস রুমে পানি উঠেছে।
আজ নড়িয়া পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, অধিকাংশ বাড়িতে পানি উঠেছে। শরীর ভিজিয়ে ও নৌকা ছাড়া বাড়িতে লোকজন চলাচল করতে পারছেন না।
জানা যায়, ১৩ আগস্ট থেকে পদ্মা নদীর সুরেশ্বর পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এরপর প্রতিদিনই পদ্মায় পানি বাড়ছে। পানি বেড়ে নড়িয়া-জাজিরা উপজেলা ও নড়িয়া পৌরসভার প্রায় ২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। নড়িয়ার চরাত্রা, মোক্তারের চর ও নওপাড়া ইউনিয়ন, নড়িয়া পৌরসভা, জাজিরার নাওডোবা, পূর্ব নাওডোবা, পালের চর, কুন্ডেরচর এলাকার অধিকাংশ গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। তাদের অনেকের ঘরে পানি উঠেছে। ফলে তারা পড়েছেন বিপাকে।
নড়িয়া পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ঢালীপাড়া গ্রামের দেলোয়ার ব্যাপারী বলেন, আমাদের গ্রামে পরশুদিন পানি ঢুকেছে। আমার ঘরে ও গ্রামের অধিকাংশ ঘরের ভেতর পানি ঢুকে পড়েছে। অনেকে বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছে। শরীর ভিজিয়ে ও নৌকা ছাড়া বাড়িতে লোকজন চলাচল করতে পারছে না।
মোক্তারের চর ইউনিয়ন পোড়াগাছা এলাকার মমতাজ বেগম বলেন, হঠাৎ করে কয়েকদিন যাবত পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বাড়িঘর পানিতে তলিয়ে গেছে। উটানে, ঘরে মাচা পেতে অনেক কষ্টে আছি। আতঙ্ক নিয়ে দিন কাটাতে হচ্ছে। এখন পর্যন্ত কোনো মেম্বার-চেয়ারম্যান খোঁজ খবর নেয় নাই। হাঁস মোরগ নিয়ে অনেক কষ্টে আছি।
এদিকে শরীয়তপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ জানান, জেলার জাজিরা উপজেলায় ১৯টি, নড়িয়া উপজেলায় ২২টি ও ভেদরগঞ্জ উপজেলায় ৪টি বিদ্যালয়ের মাঠে পানি উঠেছে। এছাড়া নড়িয়া উপজেলার ৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্লাসরুমে পানি উঠেছে।
নড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ রাশেদউজ্জামান বলেন, নড়িয়া তীরবর্তী যে গ্রামগুলোতে পানি প্রবেশ করে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের তালিকা করা হচ্ছে। তাদের ত্রাণের আওতায় আনা হবে।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম আহসান হাবীব বলেন, পদ্মার পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করেছে। এছাড়া ভাঙন রোধে জিওব্যাগ ও জিওটিউব ফেলা অব্যাহত আছে।
জেলা প্রশাসক পারভেজ হাসান বলেন, পদ্মার পানি বাড়ছে। বিভিন্ন নিচু এলাকায় পানি ঢুকেছে। ওইসব এলাকার মানুষের সহায়তা করার জন্য মাঠপর্যায়ে কাজ চলছে। পদ্মার তীরবর্তী যেসব গ্রামের মানুষ পানিবন্দি ও ভাঙনের শিকার হয়েছেন, তাদের সহায়তা করা হচ্ছে।
নদী বন্দর / সিএফ