আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের হামিদ কারজাই বিমানবন্দরের দায়িত্বে আবারও ফিরে এসেছেন পুলিশ সদস্যরা। তালেবানের নিরাপত্তা সদস্যদের পাশাপাশি আফগান পুলিশ সদস্যরাও চেক পয়েন্টের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। তালেবান আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর প্রথমবারের মতো তাদের সঙ্গে পুলিশকেও কাজে নামতে দেখা গেল।
গত ১৫ আগস্ট দেশের নিয়ন্ত্রণ নেয় তালেবান। তারপর থেকে দেশে কিছুটা অস্থিরতা দেখা দেয়। কিন্তু তালেবান নতুন সরকার ঘোষণা করার পর পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। তালেবান ক্ষমতা গ্রহণের পর প্রথমদিকে পুলিশ সদস্যদের কাজে ফিরতে দেখা যায়নি। পরিস্থিতি কী হতে যাচ্ছে তারা হয়তো সেই অপেক্ষায় ছিলেন।
কিন্তু দুই পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তালেবান কমান্ডাররা তাদের ফোন করে কাজে যোগ দিতে বলেছেন। এরপরেই শনিবার তারা আবারও কাজে ফিরে এসেছেন। এএফপির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কাবুল বিমানবন্দরের মূল ভবনের বাইরে বেশ কিছু চেক পয়েন্টে বর্ডার পুলিশ সদস্যদের দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে।
এক পুলিশ সদস্য এএফপিকে বলেন, দুই সপ্তাহের বেশি সময় পর আমি গতকাল কাজে ফিরেছি। অন্য এক কর্মকর্তা বলেন, আমাকে তালেবানের এক কমান্ডার ফোন করে কাজে ফিরতে বলেছেন। গতকালের দিনটি ছিল চমৎকার। আবারও কাজে ফিরতে পেরে আমি বেশ খুশি।
তালেবানের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সেনাবাহিনী, পুলিশ এবং অন্যান্য নিরাপত্তা কর্মীসহ সাবেক সরকারের হয়ে যারা দায়িত্ব পালন করেছেন তাদের সবাইকে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করা হয়েছে।
কয়েকদিন আগেই বিমানবন্দরে কাজে ফিরেছেন ১২ আফগান নারী। ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই তালেবানের পক্ষ থেকে সাধারণ মানুষকে নিরাপত্তার বিষয়ে আশ্বস্ত করা হয়েছে এবং শুরু থেকেই নারীদেরও কাজে যোগ দিতে বলা হয়েছে। সংগঠনের পক্ষ থেকে এর আগে জানানো হয়েছে যে, নারীরা হিজাব পরে বাইরে বের হতে পারবেন এবং নিজেদের কর্মক্ষেত্রেও ফিরতে পারবেন।
তালেবানের এমন আশ্বাস পাওয়ার পর অনেক নারীরাই এখন কাজে ফেরার সাহস পাচ্ছেন। তালেবান আফগানিস্তান দখলের আগে বিমানবন্দরে কাজ করতেন রাবিয়া জামাল নামের এক নারী। তালেবান নতুন সরকার গঠনের পর তিনি এক সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনিও আবারও কাজে ফিরেছেন। তিন সন্তানের এই মা এই নারী বলছেন, তার আসলে আর কিছুই করার নেই।
তালেবান দেশের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার আগে কাবুল বিমানবন্দরে ৮০ জনের বেশি নারী কর্মরত ছিলেন। কিন্তু এর মধ্যে মাত্র ১২ জন এখন পর্যন্ত কাজে ফিরেছেন। শনিবার বিমানবন্দরের প্রবেশদ্বারে ছয় নারীকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। তারা গল্প করছিলেন এবং একে অন্যের সঙ্গে হাসি-ঠাট্টায় মেতে উঠেছিলেন। অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের আগে নারী যাত্রীদের তল্লাশি করছিলেন তারা।
নদী বন্দর / বিএফ