প্রতিবছর বর্ষা এলেই দুর্ভোগে পড়ে জামালপুরের মেলান্দহের ঝাউগড়া ইউনিয়নের রোকেয়া মোয়াজ্জেম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বিদ্যালয়টির আশেপাশের রাস্তা-ঘাট বছরের প্রায় চার থেকে পাঁচ মাস পানিতে ডুবে থাকে। এই কয়েক মাস স্কুলে যেতে পারে না শিক্ষার্থীরা।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ২০১৩-২০১৪ সালে জেলা শহর থেকে ২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে ঝাউগড়া ইউনিয়নের রৌমারি বিলের গান্ধী আশ্রম সংলগ্ন কাপাশহাটি গ্রামে নির্মাণ করা হয় বিদ্যালয়টি। দেখা যায় বিদ্যালয়ে যাওয়ার একমাত্র রাস্তা ও বিদ্যালয়ের মাঠজুড়ে কাঁদা। পূর্ব, পশ্চিম এবং উত্তরে রৌমারি বিলের পানি থৈ থৈ করছে। দুপুর থেকে বিকাল ৬টা পর্যন্ত বিদ্যালয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা থাকলেও নেই কোনো শিক্ষার্থী। প্রায় দেড় বছর পর জেলার সব শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হলেও পাঠদানে ফিরতে পারেনি এই বিদ্যালয়টি।
কাপাশহাটি গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা কুদ্দুস আলী, গোলাপ, আকাশসহ আরও অনেকে জানান, বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার পর থেকেই আষাঢ়-কার্তিক মাস পর্যন্ত আশপাশের রাস্তা পানিতে ডুবে থাকে। এতে এই কয় মাস বিদ্যালয়টি বন্ধ থাকে। প্রথম প্রথম রাস্তায় পানি থাকায় অন্য একটি জায়গায় ছেলে-মেয়েদের পাঠদান করানো হতো। তবে এখন কি অবস্থা সেটা তারা জানেন না। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করে গেছেন, কয়েকদিনের মধ্যে রাস্তায় মাটি ফেলে উঁচু করা হবে বলে শুনেছেন তারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভুক্তভোগী এক অভিভাবকের অভিযোগ, প্রতিষ্ঠার পর থেকেই আমাদের ছেলে-মেয়েদের এমন দুর্ভোগের শিকার। বিলের মাঝে অপরিকল্পিতভাবে বিদ্যালয়টি গড়ে তোলায় প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে পানিতে ডুবে থাকে প্রতিষ্ঠানটি। আর বন্যা হলে তো কথাই নেই। ৪-৫ মাস ছেলে-মেয়েরা সঠিকভাবে তাদের লেখাপড়া চালিয়ে যেতে পারে না।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সহজে গমনযোগ্য, যেখানে আমি-আপনি যেতো পারবো এমন স্থানেই প্রতিষ্ঠান হওয়া জরুরি। আর এখানে ছোট ছোট ছেলে-মেয়েদের বিষয় জড়িত। কিন্তু এই বিদ্যালয়টি দীর্ঘদিন আগের প্রস্তাবিত। প্রতিষ্ঠানটি হওয়ার আগে আরও যাচাই বাছাইয়ের প্রয়োজন ছিল। আমরা স্থানীয় মেম্বার চেয়ারম্যানদের অনুরোধ করেছি রাস্তাটি উঁচু করে দেওয়ার জন্য। শুষ্ক মৌসুমে আমাদের পক্ষ থেকেও বিদ্যালয়ের আশপাশের রাস্তা-ঘাট উঁচু করে দেয়ার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’