নতুন এক মুরগির জাত উদ্ভাবন করেছে বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএলআরআই)। এই মুরগি কম সময়ে অধিক মাংস দিতে সক্ষম হবে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা। নতুন উদ্ভাবিত এই মুরগির জাতের নাম দেয়া হয়েছে ‘মাল্টি কালার টেবিল চিকেন’ (এমসিটিসি)।
বিএলআরআইয়ের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. আতাউল গনি রাব্বানী মুরগির নতুন এ জাত উদ্ভাবনের গবেষণায় অংশ নিয়েছিলেন। তিনি বলেন, এই মুরগির মাংসের গুণাগুণ দেশি মুরগির মতো। পাশাপাশি বাংলাদেশের আবহাওয়া ও জলবায়ুর প্রেক্ষাপটেই এর উদ্ভাবন করা হয়েছে।
গবেষণা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নতুন এ জাতের মুরগির মাংসের স্বাদ দেশি মুরগির মতো এবং এই মুরগি দেখতেও অনেকটা দেশি মুরগির মতো হওয়ায় এটি উৎপাদনের মাধ্যমে খামারিরা লাভবান হবেন। কারণ সোনালি কিংবা ককরেলের মতো অন্য মুরগি থেকে এ মুরগি বিক্রিতে দাম পাবেন বেশি।
এমসিটিসি জাতের মুরগি পালনে জায়গার পরিমাণ, ব্রিডিং, তাপমাত্রা, আলো ও বায়ু ব্যবস্থাপনা অন্যান্য মুরগির মতোই। এই জাতের মৃত্যুর হার খুবই কম। ফলে এটি খামারিদের জন্য অত্যন্ত লাভজনক হবে।
বিএলআরআই সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মাঠ পর্যায়ে এই মুরগি চাষ সম্প্রসারণের লক্ষ্যে ধারাবাহিক গবেষণার মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক খামারি পর্যায়ে উৎপাদন, অভিযোজন ক্ষমতা, মৃত্যুহার, রোগবালাইয়ের প্রাদুর্ভাব ইতোমধ্যে মূল্যায়ন করা হয়েছে। বাণিজ্যিক খামার পর্যায়ে মূল্যায়ন ও সম্প্রসারণের জন্য প্রথমে ‘আফতাব বহুমুখী ফার্মস লিমিটেড কোম্পানি’র সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয় এবং তাদের সঙ্গে যৌথ গবেষণা এখনও চলমান রয়েছে।
খামার পর্যায়ে সম্প্রসারণ সফলভাবে করতে পারলে একদিকে স্বল্পমূল্যে প্রান্তিক খামারিরা অধিক মাংস উৎপাদনকারী জাতের বাচ্চা পাবেন। অন্যদিকে আমদানি নির্ভরশীলতা অনেকাংশে হ্রাস পাবে। ফলে মুরগির বাচ্চা ও মাংসের বাজার মূল্যের উত্থান-পতন নিয়ন্ত্রণ করা এবং দেশের সাধারণ মানুষের প্রয়োজনীয় প্রাণিজ আমিষসহ অন্যান্য পুষ্টির চাহিদা পূরণে এ জাতের মুরগি ভূমিকা রাখবে।
মো. আতাউল গনি রাব্বানী বলেন, এমসিটিসি জাতের মুরগির ওজনও দ্রুত বাড়বে। ৫৬ দিনে এই মুরগির গড় ওজন হবে ৯৭৫ গ্রাম থেকে এক কেজি পর্যন্ত। এ ওজন হতে প্রতিটি মুরগির প্রায় ২.২০-২.৪০ কেজি খাবার খায়। অন্য জাতের মুরগির এই পরিমাণ ওজন হতে প্রায় তিনমাস লেগে যায়।
নদী বন্দর / পিকে