1. badsha.dru@gmail.com : admi2017 :
  2. nadibandar2020@gmail.com : Nadi Bandar : Nadi Bandar
সাধারণ ক্রেতাদের নাগালের বাইরে ইলিশ - Nadibandar.com
বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ০৬:১৭ অপরাহ্ন
নদী বন্দর প্রতিনিধি:
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১
  • ১৩৮ বার পঠিত

ইলিশের ভরা মৌসুমে দাম কমার কথা থাকলেও দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম বড় ইলিশের মোকাম বরিশাল নগরীর পোর্টরোড মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে ইলিশ। দামের কারণে ইলিশের ধারেকাছেও ভিড়তে পারছেন না মধ্যবিত্ত-নিম্ন মধ্যবিত্তরা। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম এবং দেশের বাইরে ইলিশ রপ্তানিকেই দাম বাড়ার কারণ হিসেবে বলছেন পাইকার, আড়তদার ও সাধারণ ক্রেতারা।

জানা যায়, মোকামে এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১২৫০ টাকা দরে। খুচরা বাজারে ওই ইলিশের দাম হাঁকা হচ্ছে এক হাজার ১৩৫০ থেকে ১৪০০ টাকা। অথচ গতবছর মৌসুমের এমন সময়ে সেই ইলিশের দাম ছিল ৮০০ টাকা।

 

পোর্টরোড ইলিশের মোকাম ঘুরে দেখা যায়, কীর্তনখোলা নদী থেকে ইলিশ নিয়ে নৌকা, ট্রলার, স্পিডবোট এসে ভিড়ছে ইলিশের মোকামের ঘাটে। সঙ্গে সঙ্গে সেসব নৌযানকে ঘিরে ধরছেন আড়তদাররা। করছেন দর কষাকষি। দাম নিয়ে বনিবনা হলে ইলিশ কিনে আড়তের সামনেই স্তূপ করে রাখা হচ্ছে। পাইকারদের পাওনা বুঝিয়ে দিয়ে সেই ইলিশ বিক্রির জন্য ডাকে তুলছেন আড়তদাররা। এরপর সাধারণ ক্রেতা, খুচরা বিক্রেতা ও ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা পাইকাররা সেই ডাকে অংশ নিয়ে কিনছেন ইলিশ। তবে ইলিশ কেনার দিক থেকে সাধারণ ক্রেতা ও খুচরা বিক্রেতাদের চেয়ে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা পাইকাররাই সাধারণত এগিয়ে থাকেন। এরপর ক্রয় করা ইলিশ ককশিটে বরফ দিয়ে প্যাকেটজাত করছেন শ্রমিকরা। সেই ইলিশের প্যাকেট পাঠানো হচ্ছে বিভিন্ন স্থানে।

পোর্টরোড মোকামের মেসার্স আব্দুল্লাহ মৎস্য আড়তের স্বত্বাধিকারী ও জেলা মৎস্য আড়তদার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য জহির সিকদার জানান, অন্যবারের মতো এবছর নদনদীতে তো দূরের কথা, এই ভরা মৌসুমে গভীর সাগরেও ইলিশ মিলছে না। যা ধরা পড়ছে তার বেশির ভাগই ছোট আকারের। অন্যদিকে শারদীয় দুর্গোৎসবকে সামনে রেখে প্রতিদিনই ইলিশের চাহিদা বাড়ছে। রপ্তানিকারকরা প্রতিদিন এ মোকাম থেকে ৪০০ মণের মতো ইলিশ কিনছেন। এছাড়া ঢাকা, বগুড়া, রাজশাহী, রংপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের পাইকাররাও এই মোকাম থেকে ইলিশ কিনতে আসেন।

 

তিনি আরও জানান, শনিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা পর্যন্ত মোকামে ইলিশ আসে ৫০০ থেকে ৬০০ মণ। তবে তা চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল। তাই ইলিশের দাম ঊর্ধ্বমুখী। তবে ভারতে ইলিশ রপ্তানির ঘোষণার আগেও দাম কম ছিল বলেও জানান তিনি।

তিনি বলেন, ‘গত ২০ সেপ্টেম্বর এক কেজি ওজনের ইলিশ মণপ্রতি বিক্রি হয়েছে ৪২ হাজার টাকায়। চার দিনের ব্যবধানে সেই ইলিশের দাম হয়েছে মণপ্রতি ৫০ হাজার টাকা। অর্থাৎ চার দিনে প্রতি মণে দাম বেড়েছে ৮০০০ টাকা।

 

জানা যায়, শনিবার মোকামে দেড় কেজি ওজনের ইলিশ মণপ্রতি বিক্রি হয় ৬০ হাজার টাকায়। সেই হিসাবে প্রতি কেজি ইলিশের পাইকারি দাম পড়ে ১৫০০ টাকা। এক কেজি সাইজের ইলিশের দাম ছিল মণপ্রতি ৫০ হাজার টাকা। অর্থাৎ প্রতি কেজির দাম পড়েছে ১২৫০ টাকা। রপ্তানিযোগ্য এলসি আকারের (৭০০ থেকে ৯০০ গ্রাম) ইলিশ প্রতি মণ বিক্রি হয় ৮০ হাজার টাকায়। সে অনুযায়ী কেজিপ্রতি পাইকারি দাম পড়ে ১০০০ টাকা। হাফ কেজি বা ভেলকা আকারের (৪০০ থেকে ৫০০ গ্রাম) ইলিশের দাম মণপ্রতি ৩০ হাজার টাকা এবং কেজিপ্রতি দাম পড়ে ৭৫০ টাকা। গোটরা আকারের (২৫০ গ্রাম থেকে ৩৫০ গ্রাম) মণপ্রতি ২২ হাজার টাকা দাম ধরা হয়। সে অনুযায়ী এই সাইজের প্রতি কেজি ইলিশের পাইকারি দাম পড়ে ৫৫০ টাকা। আর জাটকা মণপ্রতি ১৬ হাজার টাকা এবং কেজিপ্রতি ৪০০ টাকায় বিক্রি হয়।

এ বছর ইলিশ কম পাওয়ার বিষয়ে জহির সিকদার বলেন, ‘এবার জাটকা সংরক্ষণ কার্যক্রম ঢিলেঢালাভাবে পালিত হয়েছে। ওই সময় ভোলা সংলগ্ন মেঘনা নদীতে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে অসাধু ব্যবসায়ীরা জেলেদের দিয়ে অবাধে জাটকা শিকার করেছেন। তাছাড়া নিম্নচাপ হলে সাগরে মাছ ধরা বন্ধ থাকে। সাগর থেকে নদীতে আসার সুযোগ হয় ইলিশের। কিন্তু এবার নিম্নচাপ কম হওয়ায় সেই সুযোগ হয়নি। তাই ইলিশে খরা চলছে। এর প্রভাব গিয়ে পড়েছে দামে।’

কথা হয় মোকামে ট্রলারে করে বিক্রির জন্য ইলিশ নিয়ে আসা পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার চরমন্তাজ এলাকার পাইকার মো. খোকনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘৫০ মণের মত মাছ নিয়ে আসতে পেরেছি। ট্রলারের বেশিরভাগ জায়গা খালিই ছিল। গত বছর এসময় ট্রলার ভর্তি করে মাছ নিয়ে এসেছিলাম।’

 

তিনি আরও জানান, এই মৌসুমে তার এলাকার জেলেরা মাছ পাচ্ছেন না। ঢালচর, পাতিলি, কালকিনিসহ দূরদূরান্তে গিয়ে জাল ফেললেও আশানুরূপ ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে না। এ অবস্থায় সামনের দিনগুলো কীভাবে চলবে, তা নিয়ে তারা দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তারা।

শনিবার দুপুর ১২টার দিকে মোকামের ইলিশ বিক্রেতার সঙ্গে দরদাম করছিলেন সম্পর্কে খালাতো বোন প্রিয়াঙ্কা সাহা ও পিঙ্কি দাস। তারা বলেন, ‘আমাদের বাসা বাকলার মোড় এলাকায়। বাসা থেকে কিছুটা দূরে বাজার আছে। কিন্তু সেখানে না গিয়ে কম দামে ইলিশ কেনার জন্য এই পাইকারি বাজারে এসেছি। কিন্তু এখানেও ইলিশের দাম বেশি।’

মৎস্য অধিদপ্তরের বরিশাল জেলা কার্যালয়ের কর্মকর্তা ড. বিমল চন্দ্র দাস জানান, সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে ইলিশ ধরা পড়ে বেশি। তবে এবছর এই সময়ে যে পরিমাণ ইলিশ ধরা পড়ার কথা তা ধরা পড়ছে না। গত বছর জেলায় ইলিশের উৎপাদন ছিল ৪০ হাজার মেট্রিক টন। তবে এখনও সময় আছে। সামনে ইলিশ ধরায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা আছে। নিষেধাজ্ঞার পর বেশি ইলিশ ধরা পড়ার পাশাপাশি দামও কমে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

নদী বন্দর / জিকে

 

 

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2020 Nadibandar.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com