টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরের গোবিন্দাসী, কুকাদাইর ও খানুরবাড়িতে যমুনার দুই পাড়ে মানুষের ভিড়। নদীর বুকের জলরাশি চিরে ছুটছে ময়ূরপঙ্খী, পঙ্খীরাজ, জলপরীসহ বাহারি সব নামের নৌকা। থৈ থৈ পানিতে বাদ্যযন্ত্রের তালে তালে মাঝি-মাল্লার বৈঠার ছলাৎ ছলাৎ শব্দ, যার ছন্দে মেতে ওঠে যমুনাপাড়ের বাসিন্দারা।
নৌকাবাইচ দেখতে শনিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকেই ঢল নামে মানুষের। আশপাশ ও দূর-দূরান্ত থেকে শিশু, তরুণ-তরুণী, নারী-পুরুষসহ সব বয়সী মানুষ এসেছেন ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ দেখতে। ছোট-বড় নৌকা ভাড়া করে তরুণরা অবস্থান নেন যমুনার বিভিন্ন পয়েন্ট। এ যেন এক নির্মল আনন্দ।
আবহমান বাংলার প্রাচীন ঐতিহ্য এ নৌকাবাইচ। নদীমাতৃক এ দেশের গ্রামীণ লোকসংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে ধারণ করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ভূঞাপুরে গোবিন্দাসী এলাকায় যমুনা নদীতে আয়োজন করা হয় দুই দিনব্যাপী নৌকাবাইচের।
এ নৌকাবাইচের আয়োজক টাঙ্গাইল-২ (গোপালপুর-ভূঞাপুর) আসনের সংসদ সদস্য তানভীর হাসান। শুক্রবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে শুরু হয় প্রথমদিনের নৌকাবাইচ। শনিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) ছিল নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতার দ্বিতীয় ও সমাপনী দিন। এদিন চ্যাম্পিয়ন ও রানারআপ নৌকা দল নির্দিষ্ট করতে চলে চূড়ান্ত প্রতিযোগিতা।
এতে নারায়ণগঞ্জ, সিরাজগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, জামালপুর, শেরপুর, নেত্রকোনা, পাবনা ও টাঙ্গাইলের বিভিন্ন উপজেলা থেকে আল্লাহ ভরসা, মায়ের দোয়া, সোনার তরী, ফুলের তরী, আদর্শ তরী, ময়ূরপঙ্খী, পঙ্খীরাজ ও জলপরীসহ বাহারি নাম ও বিভিন্ন রঙের ডিঙি, কুশা, সিপাই, খেলনা, অলংগা এবং ছিপনৌকাসহ শতাধিক নৌকা অংশগ্রহণ করে।
ছোট, বড় ও মাঝারি নৌকা পৃথক করে কয়েকটি ক্যাটাগরি ও রাউন্ডে এ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। চূড়ান্ত রাউন্ডে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে নিকড়াইলের ‘যমুনার তরী’ নৌকা চ্যাম্পিয়ন হয়। রানারআপ হয় একই উপজেলার ‘একতা’ নৌকা। পরে অতিথিরা বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন। এসময় চ্যাম্পিয়ন ও রানারআপ দলসহ অংশগ্রহণকারী প্রত্যেকটি নৌকাকেই পুরস্কার দেওয়া হয়।
ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি গাজী ইকরাম উদ্দিন তারা মৃধার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন এমপি তানভীর হাসান। অন্যদের উপস্থিত ছিলেন ভূঞাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুদুল হক মাসুদ, জেলা বাস মিনিবাস মালিক সমিতির মহাসচিব গোলাম কিবরিয়া, উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক তাহেরুল ইসলাম তোতা প্রমুখ।
নদী বন্দর / সিএফ