ভারতের উপকূলের দিকে এগিয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘গুলাব’। রোববার সন্ধ্যায় ভারতের ওড়িশার গোপালপুর ও অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তনমের মাঝে কলিঙ্গপত্তনমের কাছে আছড়ে পড়বে এই শক্তিশালী ঝড়। তবে ঘূর্ণিঝড়ের সরাসরি প্রভাব পশ্চিমবঙ্গে না পড়লেও দুর্যোগের হাত থেকে রেহাই মিলছে না।
রোববার থেকেই বৃষ্টি শুরু হয়েছে উপকূলের জেলাগুলোতে। সেই সঙ্গে কলকাতাতেও হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ওড়িশা ও অন্ধ্র উপকূলে ভারী বৃষ্টি হবে। মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। তৈরি রাখা হয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা টিমকে। একই অবস্থা পশ্চিমবঙ্গের উপকূল এলাকাতেও। মাইকে প্রচার করে সবাইকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিচ্ছে প্রশাসন।
এরই মধ্যে সোমবার উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে আরও একটি ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হওয়ার কথা। সেটি শক্তি বাড়িয়ে নিম্নচাপে পরিণত হবে। মঙ্গলবার এই ঝড় পশ্চিমবঙ্গের উপকূল এলাকায় পৌঁছাবে। এর প্রভাবে মঙ্গল ও বুধবার কলকাতা, দুই মেদিনীপুর, দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রামসহ দক্ষিণবঙ্গের প্রায় সব জেলাতেই ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হবে।
সেই সঙ্গে উপকূলের জেলাগুলোতে ৫০ থেকে ৬০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা থেকে সর্বোচ্চ ৭০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা এবং কলকাতাসহ দক্ষিণবঙ্গের বাকি জেলাগুলোতে ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা থেকে সর্বোচ্চ ৫০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা গতিবেগে ঝোড়ো হাওয়া বইবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর।
এদিকে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘গুলাব’ বাংলাদেশ সময় সকালে উপকূল থেকে ৫২৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছিল। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা ও সমুদ্রবন্দরগুলোর ওপর দিয়ে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। তাই বাংলাদেশের চারটি সমুদ্রবন্দরে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত বহাল রাখা হয়েছে।
উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও কাছাকাছি পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘গুলাব’ আরও পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে রোববার সকাল ৬টায় একই এলাকায় অবস্থান করছিল এবং এটি চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৫২৫ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৩০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল। এটি আরও পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে।
নদী বন্দর / জিকে