মৌলভীবাজারবাসীকে প্রতি বছরের বন্যা আতঙ্ক থেকে রেহাই দিতে জেলার মনু নদী সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ প্রকল্পের ফলে মৌলভীবাজার সদর, রাজনগর ও কুলাউড়া উপজেলার বাসিন্দারা স্থায়ীভাবে বন্যার ভোগান্তির হাত থেকে রেহাই পাবে। এ লক্ষ্যে চলতি বছরের জুনে ৯৯৬ কোটি ২৮ লাখ টাকার প্রকল্প একনেকে অনুমোদন হয়েছে। এরই মধ্যে শুরু হয়েছে জমি অধিগ্রহণ, ফ্লাডওয়াল নির্মাণসহ আনুষঙ্গিক প্রক্রিয়া। প্রকল্পের কাজ ২০২৩ সালের ৩০ জুনের মধ্যে বাস্তবায়নের কথা রয়েছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
উৎপত্তিস্থল ভারতের ত্রিপুরা হয়ে আঁকাবাঁকা ৭২ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশের মৌলভীবাজারের কুশিয়ারা নদীর সঙ্গে মিশেছে একসময়ের খরস্রোতা মনু নদী। কিন্তু গত ৫০ বছর ধরে নদীর তলদেশে জমা পলিতে স্থানে স্থানে জেগে উঠেছে চর। এতে প্রতি বর্ষায় কোথাও না কোথাও বাঁধ উপচে বা ভেঙে বন্যা মৌলভীবাজার সদর , রাজনগর, ও কুলাউড়া উপজেলাবাসীর জন্য নিত্যনৈমিত্তিক দুর্ভোগ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বন্যার পানিতে শহর গ্রাম পর্যন্ত ঘরবাড়ি, সড়ক, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তলিয়ে প্রতি বছরই ব্যাপক ক্ষতি হয় ।
দীর্ঘদিনের এই ভোগান্তি থেকে মৌলভীবাজারবাসীকে রেহাই দিতে সরকার ইতোমধ্যে মনু নদীর ভাঙন থেকে মৌলভীবাজার জেলার সদর, রাজনগর ও কুলাউড়া উপজেলা রক্ষা প্রকল্প হাতে নিয়েছে। চলতি বছর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি, একনেক এ অনুমোদনের পর বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
মৌলভীবাজারের পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকল্প পরিচালক ও তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী প্রকাশ কৃষ্ণ সরকার বলেন, নতুন প্রকল্পের পাশাপাশি আমরা আগের যে ৮৬ কিলোমিটার বাঁধ রয়েছে সেই বাঁধও আমরা ঠিক সংস্কার করব।
প্রকল্পের কাজ পুরোপুরি সম্পন্ন হলে তিন উপজেলার এক লাখ হেক্টর ফসলি জমিসহ দেড় লাখ হেক্টর এলাকা পুরোপুরি বন্যামুক্ত হবে। মৌলভীবাজারের পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান বলেন, এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে তিন উপজেলার মানুষ নদীভাঙনের কবল থেকে রক্ষা পাবে। সে সঙ্গে মৎস্য কাজের বিপ্লব ঘটবে।
দীর্ঘ প্রতীক্ষার এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে এই তিন উপজেলার প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ বাঁধ ভাঙন ও বন্যা আতঙ্ক থেকে রেহাই পাবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
নদী বন্দর / পিকে