বেশ কিছু দিন এক দামে স্থির থাকার পর খুলনার বাজারে বাড়তে শুরু করেছে পেঁয়াজের দাম। মানভেদে প্রতি কেজিতে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ১০ টাকা করে। বর্তমানে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে এক কেজি পেঁয়াজ।
অভ্যন্তরীণ বাজারে সংকট ও ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেওয়ায় দাম বৃদ্ধি পেয়েছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের। অন্যদিকে অসাধু ব্যবসায়ীর কারসাজিতে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ক্রেতারা।
নগরীর কয়েকটি কাঁচা বাজার ঘুরে দেখা যায়, তিনদিন আগে মানভেদে ব্যবসায়ীরা যে পেঁয়াজ ৪৫ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি করেছেন, তা খুচরা বিক্রেতারা ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন।
নগরীর সোনাডাঙ্গা এলাকার ট্রাক টার্মিনালের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী ও ফারাজী ভান্ডারের কর্মকর্তা মো. মোকাদ্দেস হোসেন গাজী জানান, এ বাজারে প্রতিদিন প্রায় ছয় ট্রাক পেঁয়াজের প্রয়োজন। সেখানে দুই ট্রাক করে পেঁয়াজ আসছে। যা প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ট নয়। তিনি কুষ্টিয়া, ফরিদপুর ও ঝিনাইদহের বিভিন্ন মোকাম ঘুরে পেঁয়াজ কেনেন। গত কয়েকদিন ধরে এসব মোকামেও পেঁয়াজের সংকট দেখা দিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘পেঁয়াজ ওই সব এলাকার গৃহস্থদের কাছে রয়েছে। তারা সংকট মুহূর্তে বেশি দামে বিক্রির আশায় পেঁয়াজ সংরক্ষণ করে রাখছেন। আর ভারত থেকে পেঁয়াজ না আসলে আরও বেড়ে যাবে এ পণ্যের দাম।’
ওই বাজারের মেহরাব বাণিজ্য ভান্ডারের ম্যানেজার মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘পেঁয়াজ এখন ভারত নির্ভর পণ্য। আমাদের দেশে যে পরিমাণ পেঁয়াজ উৎপাদন হয় তা দিয়ে দেশের মানুষের চাহিদা মেটানো সম্ভব না। ভারত থেকে পেঁয়াজ না আসলেই এ পণ্যটির দাম বেড়ে যায়। গত সপ্তাহে ভারতে প্রাকৃতিক দুর্যোগে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তাই সেখান থেকে পেঁয়াজ আসছে না।’
আল্লাহর দান বাণিজ্য ভান্ডারের আড়ৎদার মো. ইসমাঈল হোসেন জানান, তিনদিন ধরে স্বল্পতার কারণে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। গত বুধবার (২৯ সেপ্টেম্বর) পেঁয়াজের পাইকারি মূল্য ছিল ৩৮ টাকা, বৃহস্পতিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) ৪৬ টাকা, শুক্রবার (১ অক্টোবর) ৪৭ টাকা, শনিবার (২ অক্টোবর) ৪৮ টাকা এবং রোববার (৩ অক্টোবর) ৫২ টাকা।
জানা গেছে, এ বাজারে পেঁয়াজের ৩৫টি আড়ত রয়েছে। আড়তগুলোতে যে পরিমাণ পেঁয়াজের প্রয়োজন তা আসছে না। ভারত থেকে পেঁয়াজ আসা শুরু হেলে দাম কিছুটা কমেতে পারে। তা না হলে দাম আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। যদিও দেশে এ বছর পেঁয়াজের ভালো ফলন হয়েছে।
নগরীর টুটপাড়া জোড়াকল বাজারের পেঁয়াজ বিক্রেতা আব্দুল্লাহ, সেলিম মুন্সি, রাসেলের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পরিবহন খরচ ও আড়তদার দিয়ে ৪৫ টাকায় পেঁয়াজ কিনতে হয়েছে। ৬০ টাকায় বিক্রি করতে না পারলে লোকসান হবে বলে জানান তারা।
নগরীর রূপসা সন্ধ্যা বাজারে ক্রেতা আলেয়া বেগম, রইসুল ইসলাম, হযরত আলী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি মানুষের জীবনযাত্রাকে ব্যাহত করছে। ব্যবসায়ীরা বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বৃদ্ধি করে চলেছে। দ্রব্যমূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখার দিকে নজর দেওয়ার আহ্বান জানান তারা।
নদী বন্দর / এমকে