সিরাজগঞ্জের বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম সংযোগ মহাসড়কসহ হাটিকুমরুল গোলচত্বর থেকে তিনটি রুটে অন্তত ৪০ কিলোমিটার সড়ক জুড়ে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়েছে। এতে বিকল্প সড়ক হিসেবে শহরে প্রবেশের বিভিন্ন সড়কেও যানবাহন ঢুকে পড়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৪ অক্টোবর) বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মহাসড়কে যানজটের তীব্রতা ভয়াবহ আকার ধারণ করে।
সড়ক ও জনপথ (সওজ) ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গত মঙ্গলবার (১২ অক্টোবর) সকাল থেকে জরাজীর্ণ নলকা সেতুর সংস্কারকাজ শুরু করার পর যানজটের তীব্রতা বাড়তে থাকে। বুধবার (১৩ অক্টোবর) দিনগত রাতে যানজটের তীব্রতা আরও বাড়ে। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮টায় বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম মহাসড়কের সয়দাবাদ থেকে হাটিকুমরুল গোলচত্বর পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার, হাটিকুমরুল গোলচত্বর থেকে ভূঁইয়াগাঁতী পর্যন্ত ১৫ কিলোমিটার ও হাটিকুমরুল গোলচত্বর থেকে রাজশাহী রুটের নাঈমুড়ী বাজার পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার এলাকায় যানজট ছড়িয়ে পড়ে।
হাটিকুমরুল হাইওয়ে পুলিশের ট্রাফিক পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম জানান, নলকা সেতুটির অবস্থা খুবই খারাপ। সেতুর দুপাশে বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। সেতুর ওপরও রয়েছে খানাখন্দ। তাই এই সেতুটি সংস্কারকাজ চলতে থাকায় সেতুটির এক পাশ দিয়ে যান চলাচল করছে। এতে মহাসড়কে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়া মহাসড়কে উন্নয়নকাজ চলমান থাকায় বেশ কিছুদিন ধরেই যানজট নাকাল অবস্থা সবার।
হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার ট্রাফিক সার্জেন্ট ফয়সাল আহমেদ বলেন, ‘নলকা সেতুর কারণে চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে যাত্রীদের। হাটিকুমরুল গোলচত্বর ছাড়িয়ে যানজট ভূঁইয়াগাঁতী বাজার পর্যন্ত ছড়িয়ে গেছে। আমরা যানজট দূর করার চেষ্টা করছি।’
সিরাজগঞ্জ জেলা ট্রাফিক পরিদর্শক সালেকুজ্জামান জানান, নলকা সেতুতে সংস্কারকাজ শুরু করেছে সড়ক বিভাগ। এ কারণেও যানজটের তীব্রতা বাড়ছে। তবে যানজট নিরসনে ট্রাফিক পুলিশ কাজ করছে।
সিরাজগঞ্জ সওজ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী দিদারুল আলম তরফদার জানান, নলকা সেতুতে সংস্কার কাজ শুরু হওয়ার পর সেতুটির মাঝামাঝি পশ্চিমাংশে ছাদের ওপর বেশ কিছু গর্ত পাওয়া গেছে। যে কারণে এসব স্থানে স্টিলের পাটাতন দিয়ে সেতুর সংস্কারকাজ শুরু করা হয়েছে। সেতুটির সংস্কার কাজ শেষ করে আশপাশের সড়ক মেরামত করতে আরও দু থেকে তিনদিন সময় লাগবে বলেও জানান তিনি।
সওজ বিভাগ কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৮৮ সালে সিরাজগঞ্জ-বগুড়া আঞ্চলিক সড়কের ফুলজোড় নদীর ওপর নলকা সেতু নির্মাণ করা হয়। ১৯৯৮ সালে আঞ্চলিক এ সড়ক মহাসড়কে পরিণত হলেও এ সেতুটির কোনো পরিবর্তন বা পরিবর্ধন করা হয়নি। ১৯৯৮ সালে বঙ্গবন্ধু সেতু উদ্বোধনের পর থেকে এ সেতু দিয়েই উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের ২৩ জেলার যানবাহন চলাচল করছে। অতিরিক্ত যানবাহনের চাপে সেতুটি একেবারেই জরাজীর্ণ হয়ে পড়ায় সংস্কারকাজ শুরু করা কয়েছে। এ কাজ চলায় এই সেতুর এক পাশ দিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। একই সঙ্গে মহাসড়কটিতে উন্নয়নকাজ চলমান থাকায় যানবাহনের ধীরগতির কারণে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।
নদী বন্দর / পিকে