স্মার্ট ডিভাইসের প্রতি তরুণ প্রজন্মের সবসময়ই ব্যাপক আগ্রহ। তারা সবসময় এমন একটি ডিভাইস খোঁজেন, যা তাদের সব ধরনের প্রযুক্তিগত প্রয়োজন পূরণ করবে। তরুণদের সকল প্রযুক্তিগত প্রয়োজনীয়তা মেটানোর লক্ষ্যে ২০১৮ সালের আগস্টে স্মার্টফোনের বাজারে রিয়েলমির আবির্ভাব ঘটে। ব্যাপক বাজার গবেষণার মাধ্যমে তরুণদের জন্য রিয়েলমি বাজারে নিয়ে এসেছে দারুণ সব ট্রেন্ডসেটিং স্মার্টফোন ও এআইওটি ডিভাইস।
এর ফলে ব্র্যান্ডটি স্মার্টফোন উৎসাহীদের ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে। মাত্র দু’বছরে পাঁচ কোটিরও বেশি স্মার্ট ডিভাইস বিক্রি করে কাউন্টারপয়েন্ট থেকে ‘বিশ্বের দ্রুততম বর্ধনশীল স্মার্টফোন ব্র্যান্ড’-এর খেতাব অর্জন করেছে। পাশাপাশি কাউন্টারপয়েন্টের সমীক্ষা অনুযায়ী রিয়েলমি এখন বাংলাদেশে শীর্ষ চার মোবাইল ব্র্যান্ডের একটিতে পরিণত হয়েছে।
সেরা দামে সেরা স্পেসিফিকেশনের দারুন সব স্মার্ট ডিভাইস বাজারে এনে রিয়েলমি বাজারে আলোড়ন তুলছে। প্রতিষ্ঠার মাত্র দুই বছরেই ব্র্যান্ডটি বিশ্বের ৬১টি বাজারে পৌঁছে গেছে।
এই সাফল্যের মূল কারণগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে, রিয়েলমি তরুণ প্রজন্মের প্রয়োজনীয়তার দিকে সবসময় লক্ষ্য রাখে। সৃজনশীলতা প্রকাশের জন্য তরুণদের এমন একটি ডিভাইস প্রয়োজন যা তাদের অনলাইন ক্লাস থেকে শুরু করে মিটিং, বিনোদন, কাজ, গেমিং, প্রিয় মুহূর্তগুলোকে ফ্রেমবন্দি করা পর্যন্ত সবকিছু অনায়াসে করতে সক্ষম। এছাড়াও এর সঙ্গে দুর্দান্ত সফটওয়্যার-হার্ডওয়্যার অপটিমাইজেশনের সঙ্গে একটি বিশাল ঝকঝকে ডিসপ্লের দরকার হয়। রিয়েলমির স্মার্টফোনগুলো তরুণদের সব চাওয়া একসঙ্গে পূরণ করতে সক্ষম। যার কারণে ব্র্যান্ডটি তরুণদের মাঝে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
দেশের তরুণ সমাজের ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে রিয়েলমি ২০২০ সালের প্রথমদিকে বাংলাদেশে আসে এবং জয় করে নেয় স্মার্টফোনপ্রেমীদের মন। বছরজুড়ে জনপ্রিয় ই-কমার্স সাইটগুলোতে রিয়েলমির বিক্রয়ের পরিমাণ ছিল প্রত্যাশার চেয়েও বেশি। প্রতিটি নতুন ফোনই হট কেকের মতো বিক্রি হয়েছে, যা অসংখ্য অনলাইন বিক্রয় রেকর্ড ভেঙেছে এবং নতুন রেকর্ড তৈরি করেছে। ফলে পিকাবু রিয়েলমিকে ‘মোস্ট ফেভারিট ব্র্যান্ড অব দ্য ইয়াং ইন পিকাবু’ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে।
সম্প্রতি রিয়েলমি একদিনেরও কম সময়ের মধ্যে ১০ হাজার ফোন বিক্রি করে দারাজের মোবাইল ক্যাটাগরিতে শীর্ষস্থান দখল করে নেয়। দারাজের সমীক্ষা অনুযায়ী সব ধরনের মোবাইল ব্র্যান্ডের মধ্যে রিয়েলমি তরুণ গ্রাহকদের পছন্দের স্মার্টফোন ব্র্যান্ডে পরিণত হয়েছে।
সম্প্রতি তারুণ্যের প্রতীক ‘রিয়েল মিয়াও’ সবার সামনে উপস্থাপন করেছে রিয়েলমি; বয়সে তরুণ রিয়েল মিয়াও তরুণদের মতোই নির্ভীক এবং সমাজে ইতিবাচক কাজগুলোর নেতৃত্ব প্রদান করছে। তারুণ্যের শক্তি দেশব্যাপী ছড়িয়ে দিতে তরুণ ইনফ্লুয়েন্সারদের সঙ্গে নিয়ে বিভিন্ন রকম কন্টেন্ট তৈরি করে চলেছে রিয়েলমি। এরই ধারাবাহিকতায় রিয়েলমি বাংলাদেশের জনপ্রিয় চলচ্চিত্র অভিনেতা আরিফিন শুভকে ‘ফেস অব রিয়েলমি’ হিসেবে উপস্থাপন করেছে।
আরিফিন শুভ তরুণদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে রিয়েলমির বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছেন। এই উদ্যোগগুলোর মধ্য দিয়ে রিয়েলমি তরুণ স্মার্টফোন উৎসাহীদের সঙ্গে বেশ ভালোভাবে সম্পৃক্ত হয়েছে। পাশাপাশি রিয়েলমির ‘ডেয়ার টু লিপ’ ক্যাম্পেইনে নিজের হার না মানা মনোভাব তরুণদের সামনে তুলে ধরেন জনপ্রিয় মডেল ও অভিনেত্রী সুনেরাহ বিনতে কামাল। এর কিছুদিন পরই তিনি অর্জন করে নেন এ বছরের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। পাশাপাশি রিয়েলমির প্রত্যাশাপূরণ ক্যাম্পেইন তরুণদের মন জয় করেছে।
কাউন্টারপয়েন্ট রিসার্চের তথ্যমতে, ২০২০ সালের প্রথম প্রান্তিক থেকে দ্বিতীয় প্রান্তিকে রিয়েলমি এক হাজার শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। ২০২০-এর তৃতীয় প্রান্তিকে রিয়েলমি দেশের শীর্ষ চার মোবাইল ব্র্যান্ডের মধ্যে জায়গা করে নিয়েছে। এমনকি গুগল ট্রেন্ডেও দেশের মোবাইল ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে ‘রিয়েলমি’ সবচেয়ে বেশি অনুসন্ধান করা হয়েছে।
স্মার্টফোন বাজারে বৈচিত্র্য আনার লক্ষ্যে রিয়েলমি নির্দিষ্ট বিরতিতে বাজারে সি সিরিজ, নাম্বার সিরিজ এবং প্রো সিরিজের বেশকিছু ফোন নিয়ে এসেছে। শক্তিশালী প্রসেসর, ক্যামেরা ও চোখ-ধাঁধানো ডিজাইনে সবগুলো ফোন ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। সম্প্রতি তরুণ গেমারদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে উন্মোচন করা হয়েছে ‘নারজো’ সিরিজ; যাতে রয়েছে শক্তিশালী গেমিং প্রসেসর, ক্যামেরা, পাওয়ারফুল ব্যাটারি ব্যাকআপ আর স্টাইলিশ লুক।
রিয়েলমি মূলত স্মার্টফোন প্রস্তুতকারক হলেও তরুণ প্রজন্মের জীবন আরও স্বাচ্ছন্দ্যদায়ক করতে ব্র্যান্ডটি এআইওটি (আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স অব থিংস) জগতে প্রবেশ করেছে। স্মার্টফোন রিয়েলমির মূল পণ্য হিসেবে থাকবে, সঙ্গে চারটি বিভাগে অসংখ্য নতুন (এন) এআইওটি পণ্যে ‘১+৪+এন’ কৌশল অবলম্বনে ব্র্যান্ডটি একটি স্মার্ট ইকোসিস্টেম তৈরি করছে, যা সবার জীবনকে সহজ করে তুলবে। সেরা স্পেসিফিকেশনে রিয়েলমির এআইওটি পণ্যগুলো ইতোমধ্যে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এবং ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়ার লক্ষ্য অর্জনে জাতিকে আরও সামনে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
দিনকে দিন রিয়েলমির ফ্যানবেস বেড়ে চলেছে। তাই ব্র্যান্ডটি সারাদেশে তাদের বিক্রয় পরবর্তী উন্নত সেবা প্রদানের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। রিয়েলমি ইতোমধ্যে সারাদেশে ২০০টিরও বেশি ব্র্যান্ড শপ খুলেছে এবং আরও অনেকগুলো খোলার পরিকল্পনা করেছে।
সম্প্রতি স্বনামধন্য আমেরিকান বিজনেস ম্যাগাজিন ‘ফাস্ট কোম্পানি’-তে ২০২০ সালের ‘৫০ মোস্ট ইনোভেটিভ কোম্পানিজ ইন চায়না’-য় তালিকাভুক্ত হয়েছে। রিয়েলমি তার ভিন্নধর্মী ও নান্দনিক ডিজাইনের জন্য অসংখ্য ডিজাইন অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছে। বিশ্বখ্যাত ডিজাইনার- নাওতো ফুকাসাওয়া, হোসে লেভি এবং আরও অনেক প্রখ্যাত ডিজাইনার চমৎকার ডিজাইন তৈরির লক্ষ্যে রিয়েলমি ল্যাবের সঙ্গে কাজ করছেন। এই ডিজাইনগুলো রেড ডট ডিজাইন অ্যাওয়ার্ড, জার্মান ডিজাইন অ্যাওয়ার্ড এবং অ্যাওয়ার্ড অব গুড ডিজাইন অস্ট্রেলিয়ার মতো উল্লেখযোগ্য পুরস্কার অর্জন করেছে।
একটি তারুণ্যদীপ্ত প্রতিষ্ঠান হিসেবে রিয়েলমি বিশ্বাস করে তরুণ প্রজন্ম তাদের নিষ্ঠা, সৃজনশীলতা ও কঠোর পরিশ্রম দিয়ে বিশ্বে ইতিবাচক পরিবর্তন নিয়ে আসবে। তাই ব্র্যান্ডটি বাংলাদেশের তরুণদের কাজ বিশ্বের সামনে তুলে ধরার জন্য ‘প্রত্যাশা পূরণ’ নামে একটি প্ল্যাটফর্ম চালু করেছে।
পাশাপাশি বাংলাদেশি তরুণ রিয়েলমি গ্লোবাল ক্যাম্পেইনে সব দেশকে পেছনে ফেলে অর্জন করে নিয়েছেন ‘নাম্বার ওয়ান অ্যাচিভার’-এর খেতাব।
এছাড়াও রিয়েলমি প্রায়ই বিভিন্ন ইন্টার্যাক্টিভ অনলাইন কন্টেস্টের আয়োজন করছে।
ব্র্যান্ডটি ‘আস্ক রিয়েলমি’ নামে একটি শো-এর আয়োজন করেছে, যেখানে রিয়েলমির পক্ষ থেকে ফ্যানদের বিভিন্ন জিজ্ঞাসার উত্তর দেয়া হয়। সম্প্রতি দেশের নানা প্রান্ত থেকে ফ্যানদের নিয়ে আয়োজন করেছে ফার্স্ট ফ্যানস মিট যেখানে শীর্ষ ১৫ ফ্যানকে তাদের অবদানের জন্য সম্মাননা প্রদান করেছে রিয়েলমি।
খুব অল্প সময়ের মধ্যে রিয়েলমি তরুণদের মাঝে এমন আত্মবিশ্বাস তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে- তারা যদি মন-প্রাণ দিয়ে কোনো কিছু করে বা কোনো কিছু অর্জন করতে চায়, তাহলে তাদের দিয়ে সব সম্ভব। ‘ডেয়ার টু লিপ’ চেতনায় তরুণ প্রজন্ম তাদের ভেতর যে সম্ভাবনা আছে তা দিয়ে যেন পৃথিবীকে আরও আলোকিত করতে পারে, রিয়েলমি সে চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। তরুণ প্রজন্মের জন্য রিয়েলমির নিরবচ্ছিন্ন প্রয়াসই রিয়েলমিকে বাংলাদেশের তরুণদের সবচেয়ে পছন্দের ব্র্যান্ডে পরিণত করেছে।
নদী বন্দর / জিকে