কম্বলসহ বিভিন্ন শীত নিবারণী বস্ত্রের পাইকারি বাজার খ্যাত রাজধানীর বঙ্গবাজারে বেচাকেনা বেশ জমে উঠেছে। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে গত দুদিন থেমে থেমে হালকা বৃষ্টি হচ্ছে। হিমেল বাতাসসহ বৃষ্টির পর রাজধানীতে হালকা শীতও পড়েছে। রাস্তাঘাটে কিছু মানুষকে গরম কাপড় পরেও চলাচল করতে দেখা গেছে।
রাজধানীসহ সারাদেশে শীত এখনও জেঁকে না বসলেও আগামী কয়েকদিনের মধ্যে শীত জেঁকে বসতে পারে এমন আশঙ্কায় অনেকেই শীতের কাপড় কিনতে ফুটপাত থেকে শুরু করে বিভিন্ন শপিং মলে ছুটছেন। রাজধানীর তুলনায় গ্রামাঞ্চলে বেশি শীত পড়তে শুরু করায় কম্বলের চাহিদা বেড়েছে। রাজধানীর বঙ্গবাজার অপেক্ষাকৃত কম দামে পাইকারি দামে কম্বল কেনার বড় বাজার। এ বাজারে শীত পড়ার আগেই আরও কমপক্ষে একমাস আগে থেকেই কম্বলের বেচাকেনা শুরু হয়েছে। বিভিন্ন বিভাগ, জেলা ও উপজেলা থেকে ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা আগে থেকেই কম্বল কিনে মজুত করে রাখছেন। গত দুইদিনে বেচাকেনা আরও বেড়েছে।
রোববার (১৪ নভেম্বর) সরেজমিন বঙ্গবাজার ঘুরে দেখা গেছে বিভিন্ন দোকানে পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতাদের বেশ ভিড়। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে চাহিদাপত্র অনুযায়ী শত শত কম্বলের বস্তায় নাম-ঠিকানা লিখে পাঠানো হচ্ছে। কোনো কোনো ব্যবসায়ী নিজে এসে মালামাল বুঝে নিয়ে ভ্যানগাড়িতে তুলে নিচ্ছেন। পাশাপাশি খুচরা ক্রেতারা সংখ্যায় কম হলেও কম্বল কিনতে আসছেন বলে জানান দোকানিরা।
সাইফুর রহমান নামে একজন ব্যবসায়ী জানান, তার দোকানে বছরের আট/নয়মাস শার্ট ও গেঞ্জি বিক্রি করেন। অবশিষ্ট চারমাস কম্বল বিক্রি করেন।
তিনি জানান, কম্বলের বেচাকেনা আরও মাসখানেক আগে থেকেই শুরু হয়েছে। সারাদেশে যারা শীতকালে কম্বল বিক্রি করেন তারা আগে থেকেই মালামাল কিনে মজুত করে রাখেন। বেচাকেননা মোটামুটি ভালো, সামনের মাস থেকে ত্রাণের কম্বল দেওয়া শুরু হবে। তখন আরও বেশি বিক্রি হবে বলে তিনি জানান।
হারুন মিয়া নামের একজন ব্যবসায়ী বলেন, বঙ্গবাজারের এ মার্কেটে কম দামের ১৪০ টাকা থেকে শুরু করে চাইনিজ ৯-১০হাজার টাকা দামের কম্বলও রয়েছে। তবে ৫০০ থেকে ২০০০ টাকা দামের কম্বলের ক্রেতাই বেশি।
হোসনে আরা নামে নরসিংদীর একজন গৃহবধূ স্বামীকে সঙ্গে নিয়ে এসে ১ হাজার ৮০০ টাকায় একটি কম্বল কেনেন। আলাপকালে তিনি বলেন, নরসিংদীতে এ কম্বলটি আরও ৩-৪শ টাকা বেশি দামে কিনতে হতো। ডাক্তার দেখাতে এসে তিনি কম্বল কিনে নিচ্ছেন বলে জানান।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, শুধু কম্বলই নয়, বঙ্গবাজারে অন্যান্য শীত বস্ত্র, সোয়েটার, জ্যাকেট, শাল, ট্রাউজার-ট্রাকস্যুটের দোকানেও ক্রেতারা ভিড় করছেন। বিশেষ করে শিশুদের শীতের কাপড়ের দোকানে বেশি ভিড়।
ক্রেতারা জানান, শীত জেঁকে বসার আগে কিনলে অপেক্ষাকৃত কম দামে কেনা যায়। শীত বাড়লে শীতবস্ত্রের দামও বাড়ে।
নদী বন্দর / জিকে