কনকনে শীত ও হিমেল হাওয়ায় উত্তরের সীমান্তঘেঁষা জেলা কুড়িগ্রামে জেঁকে বসেছে শীত। এতে করে বিপাকে পড়েছে খেটে খাওয়া দিনমজুরসহ নিম্ন আয়ের মানুষ। শীতে কাবু হয়ে পড়ছেন শিশু ও বৃদ্ধ। কুয়াশায় দিনেও হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। তবে বিপাকে পড়েছেন জীবিকার সন্ধানে ঘর থেকে বের হওয়া মানুষ।
সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সকাল থেকেই কুয়াশাচ্ছন্ন জেলার বিভিন্ন এলাকা। কুয়াশায় ঢেকে গেছে পথঘাট। কনকনে হাওয়ায় শীতের তীব্রতা বাড়িয়ে দেয় কয়েক গুণ। কাজে যোগ দিতে ঘর থেকে বের হওয়া শ্রমজীবীরা পড়েছেন বিপাকে।
সকাল থেকেই শীত ও হিমেল হাওয়া উপেক্ষা কাজের সন্ধানে ছুটছে মানুষ। দুর্ভোগ নিয়েই ট্রলি ও ট্রাক্টরে চড়ে শহরে প্রবেশ করতে দেখা যায় তাদের।
এসময় শহরমুখী নির্মাণ শ্রমিক জয়নাল, আকরাম ও শহিদুল জানান, শহরে যাচ্ছি ভবন নির্মাণের কাজে। খুব ভোরে শীত উপেক্ষা করে কাচা ঘুম ভেঙে উঠতে হয়েছে। ট্রলিতে চড়ে শীতে কাঁপছি। কিন্তু কাজে না গেলে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে না খেয়ে থাকতে হবে।
শহরের পাঁচগাছী এলাকার রিকশা শ্রমিক মাইদুল বলেন, অটোরিকশা নিয়ে যাচ্ছি, ঠাণ্ডা বাতাসে হা-পা যেন অবশ হয়ে আসছে। খুব সকালে বের হয়েছি কিন্তু শীত ও ঠাণ্ডার কারণে এক ঘণ্টা পার হলেও এখন পর্যন্ত একটি যাত্রীও মিললো না। এভাবে শীত বাড়তে থাকলে যাত্রী সংকটে না খেয়ে থাকতে হবে।
পৌর এলাকার একতা পাড়া গ্রামের ভ্যানচালক এরশাদুল জানান, ভ্যান চালাতে শীতে হাত পা কাঁপছে। কয়েক দিন ধরে রাত থেকেই শীতের তীব্রতা বাড়ছে। গত দুদিন ঠিক মতো রোজগার হয়নি। ঋণ নিয়ে সংসারে কাজে লাগিয়েছিলাম। কিস্তি পরিশোধ নিয়ে বিপাকে আছি।
কুড়িগ্রাম ধরলা নদী সংলগ্ন ওয়াপদা বাঁধের ষাটোর্ধ বাসিন্দা জব্বার আলী জানান, এলাকাবাসীর দয়া ও ভিক্ষা করে পেটে ভাতের যোগান দেই। ভিক্ষার জন্য ঘর থেকে বের হলাম। কিন্তু যে ঠাণ্ডা তাতে পথ চলাই মুশকিল। প্রতিবেশীর দেওয়া একটি ছেড়া শীতের কাপড় গায়ে দিয়েছি।
এ বিষয়ে রাজারহাট আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ক্রমেই শীত বাড়ছে। শীতের সঙ্গে উত্তরের হিমেল হাওয়া বয়ে যাওয়ায় ঠাণ্ডা বেশি অনুভব হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে মৃদু এবং ডিসেম্বরের শেষের দিকে গিয়ে মাঝারি থেকে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।