কনকনে শীত ও হিমেল হাওয়ায় উত্তরের সীমান্তঘেঁষা জেলা কুড়িগ্রামে বিপাকে পড়েছে খেটে খাওয়া, দিনমজুরসহ নিম্ন আয়ের মানুষ। ঠান্ডায় কাবু হয়ে পড়ছেন শিশু ও বৃদ্ধরা। কুয়াশার কারণে দিনের বেলাতেও হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। এতে করে বেকায়দায় পড়েছেন জীবিকার সন্ধানে ঘর থেকে বের হওয়া মানুষ।
সন্ধ্যা ঘনিয়ে রাত আসার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে শীতের তীব্রতা। ভোর থেকে শীত আরও ঘনীভূত হচ্ছে। রাত জুড়েই বৃষ্টির মতো ঝরছে কুয়াশা।
বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সকাল থেকেই কুয়াশাচ্ছন্ন জেলার বিভিন্ন এলাকা। কুয়াশার চাদরে ঢেকে গেছে পথ ঘাট। কনকনে ঠান্ডা হাওয়া শীতের তীব্রতা বাড়িয়ে দিয়েছে কয়েকগুন।
সকাল থেকেই কাজের সন্ধানে রিকশা, ভ্যান ও ঘোড়ার গাড়ির চালক ও দিনমজুরদের কনকনে শীত ও হিমেল হাওয়া উপেক্ষা করে দুর্ভোগ নিয়েই শহরে আসতে দেখা গেছে। বিশেষ করে বেকায়দায় পড়েছেন কুড়িগ্রামের সাড়ে চার শতাধিক চরাঞ্চলে বসবাসকারী মানুষসহ বোরোচাষিরা। এছাড়াও ঠান্ডায় মাছ ধরতে না পারায় বিপাকে পড়েছেন কয়েক শতাধিক জেলে পরিবার।
রিকশাচালক আকবর আলী বলেন, অটোরিকশায় উঠে ঠান্ডা বাতাসে হাত-পা যেন অবশ হয়ে আসছে। শহরমুখী যাত্রী রিকশায় তুলেছি। ঠান্ডার কারণে মন চাচ্ছে না রিকশা চালাতে। কিন্তু ঋণের টাকায় রিকশা কিনেছি। না চালালে ঋণ পরিশোধ করবো কিভাবে, পরিবারকে খাওয়াবো কিভাবে?
ভোগডাঙ্গা এলাকার ভ্যানচালক আব্দুর রশিদ বলেন, দুদিন ধরে সূর্য ঠিকমতো না ওঠায় ভ্যান চালাতে পারিনি। আজ নিরুপায় হয়ে ভাড়া নিয়ে বের হয়ে হয়েছি। আজ ভ্যান না চালালে না খেয়ে থাকতে হবে।
পাঁচগাছি এলাকার বোরোচাষি সাদু মিয়া বলেন, খুব ভোর থেকেই ধরলা নদীর অববাহিকায় বোরো ধানের রোয়া রোপণ করছি। কিন্তু নদীর ঠান্ডা পানি যেন হাতে-পা কামড়ে ধরছে। সহ্য করতে পারছি না। সময়মতো রোয়া রোপণ করতে না পারলে পানি সংকটে ভুগতে হবে।
এদিকে শীত ও হিমেল হাওয়ায় কাঁপছে চরাঞ্চলসহ ও বাঁধে বসবাসরত বৃদ্ধ ও শিশুরা। এসব এলাকার অধিকাংশ মানুষেরই নেই গরম কাপড়।
রাজারহাট আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার জানান, রোববার সকাল ৯টায় কুড়িগ্রাম জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১০ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শীত ক্রমাগতভাবে বেড়েই চলছে। শীতের সঙ্গে বাড়ছে উত্তরের হিমেল হাওয়া। এতেই ঠান্ডা বেশি অনুভব হচ্ছে।
তিনি বলেন, ২০ ডিসেম্বরের পর থেকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ শুরু হতে পারে।
নদী বন্দর / জিকে