পারিবারিক কলহের জের ধরে কক্সবাজারের টেকনাফে ঘুমন্ত তিন ছেলে-মেয়েকে তুলে বিষপান করিয়ে নিজেও বিষপান করেন বাবা আনোয়ার হোসেন (৩৫)। বিষক্রিয়ায় বাবা ও বড় মেয়ে সুমাইয়া আকতার রাফি (৯) ঘরেই মারা যান। অপর মেয়ে মাহিমা তানিয়া (৩) ও জাবেদ ইকবাল (দেড় বছর) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
রোববার (১২ ডিসেম্বর) ভোরে টেকনাফ সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীরদ্বীপ ৯নং ওয়ার্ডের জালিয়াপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।
আনোয়ার হোসেন স্থানীয় মৃত ফোরকান আহমদের ছেলে ও পুরোনো রোহিঙ্গা। রাফি শাহপরীরদ্বীপ জালিয়াপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, বেশ কিছুদিন ধরে স্ত্রী রেহেনা আক্তারের সঙ্গে আনোয়ারের কলহ চলে আসছিল। এরই ধারাবাহিকতায় শনিবার দুজনের মধ্যে কথা কাটাকাটির জেরে কলহ প্রবল হয়। বিকেলে ছোট সন্তান নিয়ে স্ত্রী বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। রাতে আনোয়ার বাড়ি ফিরে দেখেন তিন সন্তান ঘুমাচ্ছে কিন্তু স্ত্রী বাড়িতে ফেরেনি।
এ সময় আনোয়ার হোসেন তার তিন ছেলে-মেয়েকে ঘুম থেকে তুলে জোরপূর্বক বিষপান করিয়ে নিজেও বিষপান করেন। এতে আনোয়ার হোসেন ও তার ৯ বছরের মেয়ে সুমাইয়ার মৃত্যু হয়। অপর দুই সন্তানকে মুমূর্ষু অবস্থায় কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের জালিয়াপাড়ার স্থানীয় মেম্বার আব্দু সালাম জানান, তাদের মধ্যে টুকটাক কলহ চলতো। বারণ করে বেশ কয়েকবার সমাধানও করেছিলাম। শনিবার কলহ সৃষ্টি হলে স্ত্রী ছেলে-মেয়ে রেখে দূর সম্পর্কের চাচার বাসায় চলে যান। এরই প্রেক্ষিতে গভীর রাতে বিষপানের ঘটনা ঘটায় আনোয়ার। স্ত্রীকে পেলে কলহের সুনির্দিষ্ট কারণ জানা যেতো বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
টেকনাফ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুল আলীম জানান, খবর পেয়েছি পারিবারিক কলহের জেরে বিষপানের ঘটনা ঘটান আনোয়ার। উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবদুল জলিল খানের নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন করছে। ঘরে বিষের বোতল খুঁজে পাওয়া না গেলেও পুরো বাড়িতে বিষের গন্ধ ছড়িয়ে আছে। ঘটনার মূল কারণ বের করার চেষ্টা চলছে বলে উল্লেখ করেন ওসি।
নদী বন্দর / এমকে