বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে ব্যাপক ঘাটতির কারণে তেলের দাম চা দিয়ে মেটানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে শ্রীলঙ্কা। চার বছর আগে ইরানের কাছে থেকে ২৫ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলারের তেল কিনেছিল দেশটি। সেই দাম এখনো পরিশোধ করা হয়নি। এর মধ্যেই দেখা দিয়েছে ভয়াবহ রিজার্ভ সংকট। এ অবস্থায় প্রতি মাসে কিছু পরিমাণে চা পাঠিয়ে মূল্য পরিশোধ করতে চায় লঙ্কান সরকার।
বুধবার (২২ ডিসেম্বর) শ্রীলঙ্কার বৃক্ষরোপণ মন্ত্রী রমেশ পাথিরানা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, তারা আগামী জানুয়ারি মাস থেকে ইরানে চা পাঠানো শুরু করতে চান। প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডলারের চা পাঠানো হবে। তবে, এভাবে চললে চার বছর ধরে ঝুলে থাকা লেনদেন পুরোপুরি মেটাতে আরও চার বছরের বেশি সময় লাগবে দেশটির।
লঙ্কান চা বোর্ডের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বিদেশি ঋণ মেটাতে এবারই প্রথম ডলারের বদলে চা পাঠাচ্ছে শ্রীলঙ্কা।
মন্ত্রী পাথিরানা জানিয়েছেন, ইরানের কাছে চা পাঠানোয় জাতিসংঘ বা যুক্তরাষ্ট্রের কোনো নিষেধাজ্ঞা নীতির লঙ্ঘন হবে না। কারণ, চা খাদ্যপণ্য হিসেবে বিবেচিত হয়। আর এই লেনদেনে কালো তালিকাভুক্ত কোনো ইরানি ব্যাংকও যুক্ত থাকবে না।
এক বিবৃতিতে শ্রীলঙ্কার বৃক্ষরোপণ মন্ত্রণালয় বলেছে, এই পদ্ধতিতে শ্রীলঙ্কার অতিপ্রয়োজনীয় বৈদেশিক মুদ্রা বেঁচে যাবে। কারণ, ওই চা শ্রীলঙ্কান রুপি দিয়েই কেনাবেচা হবে।
তবে দেশটির প্রধান বৃক্ষরোপণকারী সমিতির এক মুখপাত্র বলেছেন, সরকারের এই পদক্ষেপ একটি অস্থায়ী সমাধান মাত্র। এটি রপ্তানিকারকদের তেমন কোনো উপকার করবে না।
২০২২ সালে প্রায় ৪৫০ কোটি ডলার ঋণ শোধ করতে হবে শ্রীলঙ্কাকে, যার মধ্যে জানুয়ারিতেই রয়েছে আন্তর্জাতিক সার্বভৌম বন্ডের ৫০ কোটি ডলার। অথচ নভেম্বর মাসের শেষে দেশটির হাতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল মাত্র ১৬০ কোটি ডলার।
এরপরও শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর অজিথ নিভার্ড ক্যাবরাল বলেছেন, ২০২২ সালে দেশটি ঋণের বকেয়া সব কিস্তি সুষ্ঠুভাবে পরিশোধ করতে পারবে বলে তারা আত্মবিশ্বাসী।
শ্রীলঙ্কায় প্রতি বছর ৩৪ কোটি কেজি চা উৎপাদিত হয়। গত বছরও দেশটি প্রায় ২৬ কোটি ৫৫ লাখ কেজি চা রপ্তানি করেছে, যা থেকে তাদের আয় হয়েছে অন্তত ১২৪ কোটি ডলার।
সূত্র: বিবিসি
নদী বন্দর / সিএফ