নীলফামারীর মাঠজুড়ে এখন হলুদ সরিষা ফুলের সমারোহ। দুচোখ যেদিকে যায়, সেদিকে শুধু মনজুড়ানো সরিষা ফুলের দৃশ্যের দেখা মেলে। আর এই ফুলকে ঘিরে হাজার হাজার মৌমাছি ও প্রজাপ্রতির আনোগোনা আকৃষ্ট করছে সৌন্দর্যপিপাসু দর্শনার্থীদের।
এছাড়াও কোথাও কোথাও জেলা কৃষি বিভাগের সরিষা ক্ষেতগুলোর পাশে সারি সারি মৌ চাষের বাক্স। সরিষার ফুল থেকে মধু আহরণ করে এসব বাক্সে মৌমাছি বাসা তৈরি করছে, মাসখানেক পরেই পাওয়া যাবে মধু।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলায় এবারেই প্রথম ৫৫৫০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ করেছেন কৃষকরা। এর মধ্যে কিছু কিছু জমিতে মধু আহরণের জন্য চাষিরা মধু সংগ্রহ বাক্স বসিয়েছেন। তেল বীজ, মধুর পাশাপাশি কৃষকরা সরিষা থেকে উন্নত গো-খাদ্যও তৈরি করতে পারবে বলে আশাবাদী কৃষি সম্পসারণ অধিদপ্তর।
সরেজমিনে দেখা যায়, জেলার ডিমলা উপজেলার গয়াবাড়ী ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া ও মধ্যগয়াবাড়ী, দোলাপাড়া এলাকায় বিস্তীর্ণ মাঠ হলুদে ছেয়ে গেছে।
চাষি রশিদুল ইসলাম বলছেন, ‘আগে এই জমিতে তামাক চাষ করতাম, পরে জানতে পারলাম তামাক থেকে সরিষা চাষে বেশি লাভ, তাছাড়া তামাক খুবই ক্ষতি করে, তাই কৃষি বিভাগের পরামর্শে আমি ৫ বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছি তার পাশাপাশি কিছু ভুট্টা ও মৌসুমী ফসল চাষাবাদ করেছি। ফলন খুবই চমৎকার হয়েছে। আশা করছি সরিষা চাষে লাভবান হতে পারব’।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, তামাক চাষ থেকে ফিরিয়ে আনার জন্য কৃষি অফিস কৃষকদের সরিষার বীজ, সার, মধু সংগ্রহ করার বাক্স ইত্যাদি উপকরণ সহায়তা দিয়েছে। সরিষা চাষ করে খুবই লাভবান হওয়া যায়, সরিষাফুল থেকে মধু সংগ্রহ করা, সরিষার শাক, সরিষা থেকে ভালোমানের তেল উৎপাদন করা যায়।
পাশাপাশি তেল নেওয়ার পর অবশিষ্ট অংশ গরুর খৈল হিসেবে খাওয়ানো হয়। এতে প্রচুর পুষ্টি থাকে। কয়েক বছর ফলন ভালো হলে আগামীতে আরো বড় প্রকল্প হাতে নেওয়া হবে।
নদী বন্দর / পিকে