1. badsha.dru@gmail.com : admi2017 :
  2. nadibandar2020@gmail.com : Nadi Bandar : Nadi Bandar
বৈঠার ছন্দে রূপ ফিরে পেলো রূপসা - Nadibandar.com
সোমবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৬:০৭ অপরাহ্ন
নদী বন্দর প্রতিনিধি:
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ২ জানুয়ারী, ২০২২
  • ১৬৫ বার পঠিত

থৈ থৈ পানি, মাঝি-মাল্লার বৈঠার ছন্দ আর লাখো দর্শনার্থীর হৈ হৈ রবের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে রূপসা নদীতে নৌকা বাইচ। করোনাকালে ঘরবন্দি হয়ে পড়া খুলনাবাসীর ঢল নামে রূপসা নদীর দুই পাড়ে।

কাঁশি-বাঁশি আর ঝাঁঝরের সুর, ছলাৎ ছলাৎ ঢেউ আর দর্শনার্থীর করতালিতে মুখরিত হয়ে ওঠে রূপসা নদীর দুই তীর। ঝাঁঝ ও কাঁশি বাজিয়ে নৌকার দলনেতা সতীর্থদের এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা ও উৎসাহ জোগান।

ইংরেজি নতুন বছরের শুরুতেই এমন আয়োজনে আনন্দিত খুলনার মানুষ সাধারণ মানুষের নিরাপত্তায় পুলিশ, র্যাব, কোস্টগার্ড, আনসারসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করেন।

শনিবার রূপসা নদীতে খুলনা জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে নগর সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র এই ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচের আয়োজন করে। নগরীর ১নং কাস্টম ঘাট থেকে খানজাহান আলী রূপসা সেতু পর্যন্ত এই নৌকা বাইচ অনুষ্ঠিত হয়। সকালে এই আয়োজনকে ঘিরে মহানগরীতে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি হয়।

দুপুরে নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক। রূপসা ১নং কাস্টম ঘাটে বেলুন উড়িয়ে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে বাইচ প্রতিযোগিতা শুরু হয়।

 

খুলনা ও খুলনার বাইরের বিভিন্ন জেলা থেকে লাখো লোকের সমাগম হয়। নদীর দুই পাড়ে, ব্রিজের ওপর দাঁড়িয়ে তারা এই ঐতিহ্যবাহী বাইচ উপভোগ করেন। এছাড়া আরো অনেকে ট্রলার, স্পিড বোটে করে নদীতে ঘুরে দেখেন।

আয়োজকরা জানায়, রূপসার তীরের মানুষের নির্মল বিনোদনের অনুষঙ্গ নৌকা বাইচের ইতিহাস বহু প্রাচীন। আবেগ-উত্তেজনার নৌকা বাইচ হয়ে ওঠে এই অঞ্চলের মানুষের আনন্দের খোরাক। চিরন্তন এই ঐতিহ্য ধরে রাখতে প্রতিবছরের মতো এ বছরও খুলনার রূপসা নদীতে আয়োজন করা হয় ১৪তম খুলনা নৌকা বাইচ।

এবারের নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতার প্রথম পুরস্কার ১ লাখ টাকা, দ্বিতীয় পুরস্কার ৬০ হাজার টাকা এবং তৃতীয় পুরস্কার ৩০ হাজার টাকা। এ বছর নৌকা বাইচে ১৪টি দল অংশগ্রহণ করে।

বাইচ প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করে সুন্দরবন টাইগার। নৌকার মালিক আক্তারুজ্জামান বাবু এমপি। দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে মাগুরা টাইগার, আকরাম বিশ্বাসের দল। তৃতীয় স্থান অধিকার করে ভাই ভাই জলপরী, তেরখাদার মো. দেদার মোল্লার দল। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান শেষে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

নৌকা বাইচ দেখতে আসা কলেজছাত্রী জাসিয়া আলম বলেন, বাংলার ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা খুলনায় ধারাবাহিকতা বহন করে আসছে।আয়োজকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। খুব ভালো লাগছে নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা দেখতে পেরে।

 

কয়রার সুন্দরবন টাইগার্স নৌকা বাইচ দলের সদস্য মো. খলিলুর রহমান বলেন, প্রতিবছর রূপসা নদীতে নৌকা বাইচে আমাদের দল অংশ নেয়। প্রতিবারই আমরা চ্যাম্পিয়ন হই। ফলে আমরা খুবই আনন্দিত। আমরা যেন গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য ধরে রাখতে পারি এবং প্রতিবছরই এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করতে পারে সেই কামনা করি।

নগর সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সভাপতি মোল্লা মারুফ রশীদ বলেন, নদী-মাতৃক দেশ বাংলাদেশ। নদী বাঁচলে দেশও বাঁচবে। নৌকাবাইচ নিজস্ব সংস্কৃতি। করোনার কারণে গত বছর নৌকা বাইচ করতে পারিনি। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষ উপলক্ষে বছরের শুরুতেই এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছি।

তিনি বলেন, কয়রা, সাতক্ষীরা, পাইকগাছা, দাকোপ, বটিয়াঘাটা, নড়াইল, মাগুরা, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, কোটালীপাড়া, শরীয়তপুরসহ বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। ১৪টি নৌকা এবারের প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়।

সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় পুরস্কার বিতরণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক ও নৌকা বাইচের প্রধান সমন্বয়কারী মনিরুজ্জামান তালুকদার। আয়োজন কমিটি, র্যালি উদ্বোধন ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন নগর সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সভাপতি মোল্লা মারুফ রশিদ ও সাধারণ সম্পাদক মো. মনিরুজ্জামান রহিম।

নদী বন্দর / পিকে

 

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2020 Nadibandar.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com