ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে টানা কয়েক দিনের বৃষ্টির কারণে সিদ্ধিরগঞ্জের জালকুড়িতে বীজতলাসহ বিভিন্ন প্রকার শাক-সবজির জমি পানিতে তলিয়ে যায়। এতে করে অনেকটা বিপাকে পড়েছিলেন চাষিরা। হঠাৎ প্রচুর বৃষ্টির কারণে জালকুড়ির কৃষিজমিগুলো প্রায় ৮-১০ দিন পানির নিচে নিমজ্জিত ছিল। তারপরও জালকুড়িতে শীতকালীন শাক-সবজি ব্যাপক পরিমাণে আবাদ হয়েছে। বাজারেও মৌসুমী সবজির রয়েছে ব্যাপক চাহিদা। লোকসান কাটিয়ে চাষিদের মুখে ফুটেছে স্বস্তির হাসি।
রোববার (২ জানুয়ারি) সিদ্ধিরগঞ্জের জালকুড়িতে সরেজমিনে গিয়ে এমনই চিত্র দেখা যায়। জালকুড়িতে শীতকালীন সবজির মধ্যে লাউ, মিষ্টি কুমড়া, লালশাক খুব বেশি চাষ হয়েছে।
স্থানীয় কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এ সবজিগুলো প্রতি বছর অল্প পরিসরে চাষ করা হত। তবে লালশাক চাষটাই এখানে বেশি হয়। শীতকালীন সবজির মধ্যে লালশাক চাষ করে প্রত্যেকেই তাদের খরচ পুষিয়ে দ্বিগুণেরও বেশি লাভবান হচ্ছেন।
কথা হয় শফিকুর রহমান নামে এক কৃষকের সঙ্গে। তিনি জানান, দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে তিনি বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করছেন। শাক-সবজি চাষাবাদের জন্য তার মোট ২ বিঘা জমি আছে। তিনি দুই বিঘা জমিতেই লালশাক চাষ করেন। লালশাক চাষ করতে তার প্রতি বিঘা জমিতে ১২-১৫ হাজার টাকা খরচ হয়। লালশাক চাষ করে প্রতি বিঘা জমি থেকে প্রতিবার ১৫-২০ হাজার টাকা লাভ করেন।
সালাম শেখ নামে জালকুড়ির আরেক কৃষক বলেন, আমার যত জমি আছে সব জমিতে লালশাক আবাদ করেছি। ৫ বিঘা জমিতে লালশাক আবাদ করে প্রায় এক লাখ টাকা লাভ করেছি। এ লালশাক আবাদে খরচ কম হয়। তবে ফলন এবং লাভ বেশি হয়। তাছাড়া বীজ বপনের ২৫ দিন আগেই লালশাক বিক্রির উপযোগী হয়ে যায়। ফলে পাইকারি মূল্যে তিনি তা বিক্রি করে দেন।
কৃষক সগীর আলী বলেন, এখন সারা মাস লালশাক চাষ করে লাভবান হওয়া যায়। কারণ লাল শাক চাষাবাদে ক্ষতির সম্ভাবনা অনেক কম। এখানে যেমন আমাদের লাভ হয় আবার প্রতি মাসে মাসে ফলনও পাওয়া যায়।
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. তাজুল ইসলাম জানান, চাষাবাদ করার আগে আমরা কৃষকদের শুধুমাত্র পরামর্শ সেবাটাই দিয়ে থাকি। আর সরকার থেকে যদি কৃষকদের জন্য কোনো আর্থিক অনুদানসহ বিভিন্ন রাসায়নিক সার দেওয়া হয় তাহলে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা তৈরি করে তাদের মাঝে সুষমভাবে বণ্টন করে থাকি।
নদী বন্দর / সিএফ