আট পায়ের ছোট্ট একটি পোকা, অনেকটা উঁকুনের মতো! এই পোকার কামড়ে শরীরে সৃষ্টি হতে পারে অ্যালার্জি। অনেকটা অদৃশ্য অবস্থায় থাকে এই পোকা। কারণ অতি ক্ষুদ্র হওয়ায় খালি চোখে এই পোকা খুঁজে পাওয়া বেশ মুশকিল।
সাধারণত নরম স্থানে এই পোকা বাসা বাঁধে। নরম বিছানা, লেপ, কম্বল, সোফা, কার্পেট, ভারি পর্দা- ইত্যাদি স্থানে সহজেই বসবাস করতে পারে মারাত্মক এই পোকা। এমনকি শিশুদের খেলনাতেও বাসা বাঁধতে পারে এই পোকা। বলছি মাইট পোকার কথা।
বেশি গরম বা ঠান্ডা নয় এমন আবহওয়াতেই মাইট নামের ছোট্ট পোকা নরম বিছানায় মানুষের সঙ্গে বসবাস করতে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসে। এ ছাড়াও এরা সোফা ও ঘরের কার্পেটেও থাকতে পারে।
এমনকি কাপড়ে তৈরি বাচ্চাদের খেলনা বা টেডি বিয়ারের ভেতরেও আরাম করে বসে থাকে অ্যালার্জি সৃষ্টিকারী এই পোকা।
জার্মানির এরলাঙ্গেন বিশ্ববিদ্যালয় ক্লিনিকের অ্যালার্জি বিশেষজ্ঞ ভেরা মালার এ বিষয়ে বলেন, ‘অনেকেরই ভোরে বিছানায় থাকা অবস্থাতেই নাক দিয়ে পানি ঝড়ে কিংবা কাশি-হাঁচি হয়।
আবার কারও কারও সারা বছরই এমনটা হয়। এর কারণ হতে পারে মাইট পোকা। তাই অবশ্যই অ্যালার্জি পরীক্ষা প্রয়োজন। কারণ এই অ্যালার্জি পরে অ্যাজমা রোগে রূপ নিতে পারে।’
এমনকি যাদের এই পোকায় অ্যালার্জি আছে, তাদের বাড়িতে বেশি কার্পেট রাখা উচিত নয়। বাড়ির ছোট শিশুরা কার্পেটে বসে খেলাধুলা করে। তাদের ক্ষেত্রে মাইট পোকা অ্যালার্জির কারণ হতে পারে।
আবার ছোট শিশুরা নরম তুলতুলে কাপড়ের তৈরি খেলনা বা টেডি বিয়ার সব সময় কোলে রাখে বা খেলে। এমনকি কেউ কেউ তো সেগুলোকে সঙ্গে নিয়েও ঘুমায়।
এই খেলনার গায়ে মাইট পোকা আটকে থাকতে খুব ভালোবাসে। তার শরীরে থাকা ব্যাকটেরিয়া খুব সহজেই ছাড়াতে পারে শিশুদেরও গায়ে। ঘরের সোফা বা মোটা পর্দায়ও ঘাপটি মেরে বসে থাকে মাইট পোকা।
এই ক্ষুদ্র পোকাকে খালি চোখে ঠিকমতো দেখা যায় না বলে অনেকে জানেই না যে ‘মাইট’ পোকাই তাদের অসুস্থতার কারণ। তাই নিয়মিত সবকিছু পরিষ্কার রাখতে হবে। জেনে নিন করণীয়-
>> সপ্তাহে অন্তত দু’দিন বিছানার লেপ তোষক, বালিশ, চাদর রোদে দিন। এ ছাড়াও ঘরে যাতে আলো-বাতাস প্রবেশ করতে পারে সেদিকে খেয়াল রাখুন। সম্ভব হলে তোষক বা ম্যাট্রেসেরও একটি ঢাকনা লাগিয়ে নিন।
>> ঘুমানোর আগে কিছুক্ষণ ঘরে মুক্ত বাতাস আনার জন্য জানালা-দরজা খুলে দিন। তবে পোকামুক্ত বিছানা রাখতে বাড়তি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বিশেষ জরুরি।
>> ঘরে থাকা কার্পেট বা পাপোস নিয়মিত খুব ভালো করে পরিষ্কার করুন। মাঝে মাঝে কার্পেটও শ্যাম্পু করতে পারেন।
>> মাঝে মাঝে শিশুর খেলনাগুলো ধুয়ে দিন। তাছাড়া কিছু দিন পরপর সেগুলোকে ঘণ্টা দুয়েক ডিপ ফ্রিজে রেখে দিলে জীবাণু মরে যায়।
সূত্র: ডয়েচে ভেলে
নদী বন্দর / বিএফ