স্বল্প মূলধনের কোম্পানির মতো আলাদা বোর্ড গঠন করে দেশের সমবায় প্রতিষ্ঠানগুলোকে শেয়ারবাজারে আনার চেষ্টা করছে সমবায় অধিদপ্তর। এ লক্ষ্যে এরইমধ্যে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চেয়ারম্যানের সঙ্গে আলোচনা করেছেন সমবায় অধিদপ্তরের নিবন্ধক ও মহাপরিচালক ড. মো. হারুন-অর-রশিদ বিশ্বাস।
এক্ষেত্রে শেয়ারবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করবে স্থানীয় সরকার, পল্লি উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়। এ লক্ষ্যে ওই মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
সূত্রটি জানিয়েছে, এসএমই বোর্ডের মতো ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সমবায় সমিতিগুলোর জন্য ‘কো-অপারেটিভ বোর্ড’ চালু করার সুপারিশ করা হবে। এই বোর্ড চালু করা সম্ভব হলে নিবন্ধিত সক্ষম সমবায় সমিতিগুলো শেয়ারবাজারে এসে পুঁজি সংগ্রহের সুযোগ পাবে।
জানা গেছে, দেশে সমবায় সমিতির সংখ্যা এক লাখ ৯৭ হাজার ৬৫টি। এর মধ্যে এক লাখ ৯৫ হাজার ৮৩৫টি প্রাথমিক, এক হাজার ২০৮টি কেন্দ্রীয় এবং ২২টি জাতীয় সমবায় সমিতি। এসব প্রতিষ্ঠানের কার্যকরী মূলধন ১৫ হাজার ২৯৪ কোটি ৮৮ লাখ টাকা।
এর মধ্যে প্রাথমিক সমবায় সমিতিগুলোর কার্যকরী মূলধন ১২ হাজার ৮৪০ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতিগুলোর কর্যকরী মূলধন এক হাজার ৫৩৫ কোটি টাকা। আর জাতীয় সমবায় সমিতিগুলোর কার্যকরী মূলধন ৯১৯ কোটি ৫১ লাখ টাকা।
সমবায় প্রতিষ্ঠানগুলোকে শেয়ারবাজার থেকে অর্থ সংগ্রহের সুযোগ দেওয়ার পক্ষে সমবায় অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে যুক্তি দেওয়া হচ্ছে, ব্যক্তি মালিকানা এবং রাষ্ট্রীয় মালিকানা প্রতিষ্ঠান স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত হলেও সমবায় মালিকানার কোনো প্রতিষ্ঠান ডিএসই এবং সিএসইতে তালিকাভুক্ত হয়নি।
দীর্ঘ মেয়াদি অর্থায়নের জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সমবায় প্রতিষ্ঠানগুলো শেয়ারবাজার থেকে অর্থ সংগ্রহ করে তাদের কো-অপারেটিভ বিজনেসকে প্রসারিত করেছে। দেশের সমবায় সমিতিগুলো শেয়ারবাজার থেকে অর্থ সংগ্রহের সুযোগ পেলে উৎপাদন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখতে পারবে।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে ডিএসইর চেয়ারম্যান মো. ইউনুসুর রহমান বলেন, সমবায় অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. হারুন-অর-রশিদ বিশ্বাস বিষয়টি নিয়ে আমার সঙ্গে একবার অনানুষ্ঠানিক আলোচনা করেছেন। আমরা এ বিষয়ে লিখিত প্রস্তাব দিতে বলেছি। এখনো আমরা লিখিত কোনোকিছু পাইনি। তারা লিখিত প্রস্তাব দিলে আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখবো।
শেয়ারবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমরা কোনো চিঠি পাইনি। তাই বিষয়টি নিয়ে কোনো মতামত দিতে পারছি না।
নদী বন্দর/আরএম