আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ার দাবি জানিয়েছে টেলি কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টিক্যাব)।
সোমবার (৩০ মে) গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবি জানায় সংগঠনটি।
বিজ্ঞপ্তিতে টিক্যাব’র আহ্বায়ক মুর্শিদুল হক বলেন, দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়নে ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে ১ হাজার ৭২১ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছিল, যা আগের ২০২০-২১ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের চেয়ে ৬৬ শতাংশ বেশি ছিল। ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ ছিল ১ হাজার ৪১৫ কোটি টাকা, যা ২০১৯-২০ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের চেয়ে ১৮.৭ শতাংশ বেশি ছিল। টিক্যাব এবারও বাজেটে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর এ ধারাবাহিকতা প্রত্যাশা করে।
এতে আরও বলা হয়, প্রযুক্তির উৎকর্ষতায় বিশ্ব দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলেছে। বিশ্বব্যাপী তথ্যপ্রযুক্তির অগ্রযাত্রায় এখন মানুষ ঘরে বসেই সুফল উপভোগ করছে। বাংলাদেশও এগিয়ে যাচ্ছে ডিজিটাল বাংলাদেশের পথে। গত দুই বছরে করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্ব যখন স্থবির, প্রযুক্তিই ত্রাতা হয়ে এসেছিল মানুষের পাশে। দেশে চতুর্থ শিল্পবিপ্লব কার্যকরভাবে বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজন ব্যাপক কর্মপরিকল্পনা। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কথা ভেবে তথ্যপ্রযুক্তি খাতকে বাজেটে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া এখন সময়ের দাবি।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে টেলি কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ’র পক্ষ থেকে আগামী বাজেটে বিবেচনার জন্য ৬ দফা প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়। প্রস্তাবনাসমূহের মধ্যে রয়েছে-
১) গত অর্থবছরে মোবাইল সিমের সম্পূরক শুল্ক বাড়িয়ে যে ১৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছিল, তা এ বছর কমিয়ে আনা হোক। পাশাপাশি সম্প্রীতি অপারেটরগুলো ইন্টারনেট প্যাকেজের মেয়াদ এক বছর বাড়িয়ে যে আকাশচুম্বী মূল্য নির্ধারণ করেছে সেই অযৌক্তিক মূল্য কমানো হোক।
২) শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক ও ডিভাইস সংকট দূর করে তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক বাস্তব জ্ঞানার্জনের পরিবেশ নিশ্চিত করতে বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ রাখা হোক। ই-লার্নিং ও ই-বুককে গুরুত্ব দেওয়া ও শিক্ষিত তরুণদের জন্য বিনামূল্যে বড় পরিসরে কর্মভিত্তিক প্রশিক্ষণের নতুন প্রকল্প চালু ও অব্যাহত রাখতে বরাদ্দ দেওয়া হোক।
৩) চতুর্থ শিল্পবিপ্লব কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করে এর সর্বোচ্চ সুফল নিতে দেশে ফাইভ-জি প্রযুক্তি ব্যবহারের উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ দেওয়া প্রয়োজন।
৪) দেশেই হ্যান্ডসেট, কম্পিউটার এক্সেসরিজসহ বিভিন্ন প্রযুক্তি পণ্য উৎপাদনে উৎসাহিত করতে ভ্যাট অব্যাহতি চালু রাখা এবং গ্লোবাল ব্র্যান্ডগুলোকে দেশে প্রযুক্তি পণ্য উৎপাদনে আকৃষ্ট করতে বাজেটে বিশেষ প্রণোদনা ঘোষণা করা যেতে পারে। সারাদেশে নির্মাণাধীন হাইটেক পার্কগুলোর কাজ দ্রততার সঙ্গে শেষ করা জরুরি। পাশাপাশি স্বাস্থ্যঝুঁকির বিষষয়টি বিবেচনা করে ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় ব্যবস্থা গ্রহণ করা একান্ত প্রয়োজন।
৫) ফ্রিল্যান্সিংকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে ফ্রিল্যান্সারদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা, তাদের বিভিন্ন সমস্যা চিহ্নিত করে সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া ও দেশে পেপাল চালু করার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা প্রয়োজন।
৬) ই-কর্মাস ও অনলাইনে বিভিন্ন সেবা গ্রহণ বর্তমানে নাগরিকদের জন্য রুটিনওয়ার্কে পরিণত হয়েছে। এ খাতের ভোক্তাদের স্বার্থ সুরক্ষায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ সংশোধন এবং জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরকে আরও জনবান্ধব ও শক্তিশালী করা প্রয়োজন বলে দাবিতে উল্লেখ করা হয়।
নদী বন্দর/এবি