নীরব ঘোষিত সচিবালয় এলাকায় শব্দ দূষণ আগের চেয়ে ৭ দশমিক ৮ শতাংশ বেড়েছে। এতে শ্রবণশক্তি কমে গেছে ওই এলাকায় দায়িত্বরত ৯ দশমিক ৫ শতাংশ ট্রাফিক পুলিশের। ২৮ দশমিক ২৫ ভাগ ট্রাফিক পুলিশ উচ্চস্বরে কথা না বললে শুনতে পান না। এছাড়া ১৩ দশমিক ৭ শতাংশ ট্রাফিক পুলিশ সদস্য মোবাইলে কথা শুনতে অসুবিধায় ভোগেন।
‘নীরব এলাকা ঘোষিত সচিবালয়ের চারপাশে তীব্র শব্দ দূষণ’ শীর্ষক গবেষণায় এসব তথ্য উঠে এসেছে। শনিবার (৯ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্রের (ক্যাপস) যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে গবেষণা প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করা হয়।
২০০ ট্রাফিক পুলিশের শ্রবণ স্বাস্থ্যের ওপর প্রশ্নপত্র জরিপের ফলাফলে বের করে ক্যাপস। গবেষণা প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ২০১৯ সালের ১৭ ডিসেম্বর সচিবালয়ের চারপাশের এলাকাকে ‘নীরব এলাকা’ ঘোষণা করে সরকার। শুরুতে হর্ন বাজানোর কারণে জরিমানার জন্য পরিবেশ অধিদফতর ভ্রাম্যমাণ আদালতও পরিচালনা করে। কিন্তু কিছুদিন পরই সবকিছু থেমে যায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২০ সালের ১৪-২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট ৯ দিনে ১২টি স্থানের সবগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ শব্দ দূষণ ছিল। শব্দের সর্বোচ্চ মানের দিক থেকে ২০১৯ সালের চেয়ে ২০২০ সালে ৭ দশমিক ৮ শতাংশ দূষণ বেড়েছে।
এতে আরও বলা হয়, সংগৃহীত উপাত্তের গড় হিসাবে শব্দের সর্বোচ্চ মান পাওয়া গেলে কদম ফোয়ারায়, যা ১১৮.৭ ডেসিবেল এবং সবচেয়ে কম শব্দ সচিবালয়ের পশ্চিম দিকের (মসজিদ) স্থানে (৯৯.৫ ডেসিবেল)। ২০১৯ সালের তুলনায় সর্বোচ্চ মানের দিক থেকে ২০২০ সালে সবকটি স্থানেই শব্দ দূষণ বেড়েছে। শব্দের সর্বোচ্চ মানের ভিত্তিতে দূষণের স্থানভেদে ক্রম পরিবর্তন হয়েছে। দিনের ব্যবধানে সকালের তুলনায় দুপুর এবং বিকেলে গড় শব্দের সর্বোচ্চ মান কিছু বেশি ছিল। ১২টি স্থানের প্রত্যেকটাতে দিনের বেলায় ১০০ ভাগ সময় নীরব এলাকার জন্য প্রযোজ্য মানমাত্রার (৫০ ডেসিবল) চেয়ে প্রায় ২.১ গুণ বেশি শব্দ ছিল।
বাপার সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল বলেন, শব্দ দূষণ একটি সামাজিক ব্যাধি এবং রাষ্ট্রীয় সমস্যা। সর্ব প্রথম সমাজের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে শব্দ দূষণ বন্ধের উদ্যোগ নিতে হবে। এছাড়া হাইড্রোলিক হর্ন ব্যবহার ও এর আমদানি নিষিদ্ধকরণের আইনটি দ্রুত কার্যকরের জন্য সরকারকে অনুরোধ জানান তিনি।
নদী বন্দর / জিকে