সাংবাদিকরা অন্যায় করলে ১০ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রেখে প্রেস কাউন্সিল আইন হচ্ছে বলে কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. নিজামুল হক যে তথ্য দিয়েছেন, তা নাকচ করে দিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে সাংবাদিকদের জন্য নতুন কোনো আইন হচ্ছে না।’
বুধবার (১৫ জুন) সচিবালয়ে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) নেতাদের সঙ্গে আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মঙ্গলবার (১৪ জুন) রাজশাহীতে সাংবাদিকদের এক কর্মশালায় প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. নিজামুল হক জানান, সাংবাদিকরা অন্যায় করলে সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানার বিধান রেখে একটি আইন হচ্ছে। আইনের খসড়া এখন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে আছে। জাতীয় সংসদের পরবর্তী অধিবেশনে তা পাস হতে পারে।
এ বিষয়ে তথ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি জানি না প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ঠিক কী বলেছেন। দেশে কোনো নতুন আইন হচ্ছে না। প্রেস কাউন্সিলকে শক্তিশালী করতে সম্ভবত পাঁচ বছর আগে প্রেস কাউন্সিলই আইন সংশোধনের প্রস্তাব করেছিল। এটি এখন প্রক্রিয়াধীন।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘প্রেস কাউন্সিলের বেশির ভাগ সদস্যই হচ্ছেন সাংবাদিক ও সম্পাদক। তারা এটিকে শক্তিশালী করতে প্রেস কাউন্সিল আইনকে সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। দেশে কোনো নতুন আইন হচ্ছে না। তিনি (প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান) কী বলেছেন, সেটা আমিও পত্রিকায় দেখেছি। আসলে বিষয়টি সেরকম নয়।’
তিনি বলেন, ‘সংশোধনী প্রস্তাবটি পাঁচ বছর আগের। এটি প্রেস কাউন্সিলের সদস্যরাই করেছেন। সেটি আপনারা তাদের কাছ থেকেই জানতে পারবেন। প্রথমত আমি বলি, প্রেস কাউন্সিল যে আইনটা আছে, এটা প্রায় ৫০ বছরের পুরোনো। এ আইনে প্রেস কাউন্সিল হচ্ছে ঠুঁটো জগন্নাথ। কোনো কিছু করারই ক্ষমতা নেই। ভৎর্সনা ছাড়া আর কিছুই করার নেই। এমনকি চিমটি দেওয়ার ক্ষমতাও নেই। এজন্য সদস্যরা প্রায় পাঁচ বছর আগে একটি প্রস্তাব তৈরি করেছিলেন।’
ভুয়া সাংবাদিকদের চিহ্নিত করতে প্রকৃত সাংবাদিকদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে বলেও জানান তথ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আসলে সাংবাদিক কারা? এখন তো অনেকগুলো অনলাইন আছে, যেগুলোর নিবন্ধনও নেই। তারপর আইপি টিভি, ইউটিউব চ্যানেলের সবাই কিন্তু সাংবাদিক পরিচয় দেন। অনেক ইউটিউব চ্যানেল আছে, যারা আবার জেলা প্রতিনিধি নিয়োগ করেন। প্রতিনিধি নিয়োগের জন্য তাদের কাছ থেকে টাকা নেন।’
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘এমন বাস্তবতায় তাদের কারণে প্রকৃত সাংবাদিকদের বদনাম হচ্ছে। কিন্তু প্রান্তিক জনগোষ্ঠী তো বোঝে না কারা সাংবাদিক আর কারা সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে ধোঁকা দিচ্ছেন। এ কারণে বিভিন্ন সময় আমরা সাংবাদিকদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। সাংবাদিকদের একটি তালিকা থাকলে ভালো হয় বলে জানিয়েছি। আমরা প্রেস কাউন্সিল ও পিআইবির সঙ্গেও আলাপ করেছি। দুটি প্রতিষ্ঠান একসঙ্গে কাজ করতে পারে। উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, আপনাদের সঙ্গে আলোচনা করে এটা করা হয়েছে। আমিও ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, একটা তালিকা হওয়া উচিত।’
নদী বন্দর/এএন