সিলেটে বন্যাকবলিত বিভিন্ন এলাকায় পানি স্থির থাকলেও নিম্নাঞ্চলে এখনো গলা সমান বন্যার পানি রয়েছে। আজ সোমবার (২০ জুন) সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সিলেট নগরের বিভিন্ন এলাকায় পানি স্থির রয়েছে। শুধুমাত্র কিছু উঁচু এলাকা থেকে পানি নেমেছে। তবে নিম্নাঞ্চল এখনো আগের মতোই প্লাবিত।
সেখানে কোমর থেকে গলা সমান পানি।
বিশেষ করে, নগরের অভিজাত এলাকা হিসেবে পরিচিত উপশহরের অবস্থা খুবই খারাপ। এ এলাকার অধিকাংশ স্থানে বুক থেকে গলাসমান পানি। এ ছাড়া জেলার কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট, দক্ষিণ সুরমা, সিলেট সদর, বিশ্বনাথসহ বন্যাকবলিত বিভিন্ন এলাকায় এখনো বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত আছে।
এদিকে সিলেট ও সুনামগঞ্জের কিছু এলাকায় পানি কমতে শুরু করলেও অন্য জেলাগুলোতে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। দুর্গত মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। আশ্রয়কেন্দ্রের সংখ্যাও কম। মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে উঠলেও খাবার ও পানির তীব্র সংকট। সরকারি-বেসরকারিভাবে ত্রাণ তৎপরতা অব্যাহত থাকলেও তা পর্যাপ্ত নয়। আশ্রয়কেন্দ্রে শিশু ও বয়স্করা পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
এদিকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুর রহমান গতকাল সচিবালয়ে সাংবাদিকদের জানান, নতুন করে রংপুর, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, নীলফামারী, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ, শেরপুর, জামালপুর, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জে বন্যা দেখা দিয়েছে। এখন ১২টি জেলার ৭০টি উপজেলায় বন্যা রয়েছে। এটা বাড়ছে। তিনি জানান, সিলেট-সুনামগঞ্জে এ পর্যন্ত এক কোটি মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে নেওয়া হয়েছে। দুই জেলায় দুই কোটি ৬০ লাখ টাকা অনুদান দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বন্যাকবলিতদের উদ্ধারে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, কোস্ট গার্ড এবং ফায়ার সার্ভিস উদ্ধারকাজ করছে।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের পানি ও বন্যা ব্যবস্থাপনা ইনস্টিটিউটের পরিচালক এ কে এম সাইফুল ইসলাম গতকাল রবিবার বাসসকে বলেন, সিলেটে আজকের (গতকাল) পর থেকে বন্যার পানি ধীরে ধীরে কমতে পারে। তবে বর্তমানে বিপত্সীমা অতিক্রম করে রেকর্ড লেভেলে রয়েছে। এ জন্য পানি সম্পূর্ণ নামতে এক সপ্তাহ লাগতে পারে। বন্যার পানি বৃদ্ধির ধারা আজকের পরে হ্রাস পেতে পারে। সারা দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে একটু সময় লাগবে।
সাইফুল ইসলাম আরো বলেন, সুনামগঞ্জের বন্যার পানি আগামী ৪৮ ঘণ্টায় নেমে যাবে। এক সপ্তাহ ধরে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। গত শনিবার ১২০ মিলিমিটার ও গত রবিবার ২৩৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এই বৃষ্টির পানি সিলেট-সুনামগঞ্জসহ সংশ্লিষ্ট অঞ্চল থেকে এখনো নামছে।
নদী বন্দর/এসএফ