উজানের ঢল আর ভারী বর্ষণে ভয়াবহ বন্যায় বিপর্যস্ত পুরো সিলেট বিভাগ। এ অবস্থায় বন্যাকবলিত সিলেট আবারও একটানা তিন ঘণ্টা ভারী বৃষ্টি হয়েছে। একই সঙ্গে নগরের অনেক এলাকায় রাস্তাঘাটে পানি জমে গেছে। অন্যদিকে ছড়াখালগুলো সুরমার পানির সঙ্গে একাকার হওয়াতে নগরের কিছু এলাকায় ফের পানি উঠেছে।
মঙ্গলবার (২৮ জুন) রাত ১০টা থেকে ১টা পর্যন্ত টানা তিন ঘণ্টার ভারী বৃষ্টিতে নগরের অনেক এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এ কারণে ফের বন্যার শঙ্কায় আছেন স্থানীয়রা। তবে ইতোমধ্যে সিলেট জেলার প্রায় ৮০ ভাগ এবং সুনামগঞ্জের প্রায় ৯০ ভাগের বেশি এলাকা প্লাবিত হয় ভয়াবহ বন্যায়।
সিলেট পাউবো সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার (২৮ জুন) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ৫০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। আমলশীদে কুশিয়ারা নদীর পানি বিপৎসীমার ১২৪ সেন্টিমিটার ওপরে, কুশিয়ারার পানি বিয়ানীবাজারের শেওলা পয়েন্টে বিপৎসীমার ৪৪ সেন্টিমিটার এবং ফেঞ্চুগঞ্জে কুশিয়ারার পানি বিপৎসীমার ১০৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। যে কারণে ওইসব এলাকায় ফের বন্যার পানি বাড়তে শুরু করেছে।
সিলেট পাউবোর উপ-প্রকৌশলী নিলয় পাশা বলেন, আগামী বেশ কয়েক দিন বৃষ্টির পূর্বাভাস আছে। এতে পানি বাড়বে কি না, আগেই বলা যাচ্ছে না। আর উজানে ভারী বৃষ্টি হলে সিলেটে পাহাড়ি ঢল নামতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তারা বলেন, মঙ্গলবার (২৮ জুন) রাতে সিলেটে ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। তবে আরও কয়েক দিন বৃষ্টিপাত হবে। দিনের তুলনায় রাতে বেশি বৃষ্টি হবে। নদ-নদীর পানিও কিছুটা বাড়বে। এ অবস্থায় উজানে ভারী বৃষ্টি হলে বন্যার পানি আবারও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
উল্লেখ্য, সরকারি তথ্য অনুযায়ী, সিলেট বিভাগে এবার প্রায় অর্ধকোটির বেশি মানুষ বন্যা কবলিত হয়েছেন। এর মধ্যে সিলেট জেলায় বন্যায় ৪ লাখ ১৬ হাজার ৯৬৬টি পরিবারের ২১ লাখ ৯৬ হাজার ৯৬৫ জন মানুষ বন্যাকবলিত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৩০ হাজার ৯৪০টি ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিভাগ জুড়ে প্রাকৃতিক দুর্যোগে ৫২ জনের মৃত্যু হয়েছে।
নদী বন্দর/এসএফ